মাঝরাস্তায় এক যুবককে ফেলে বেধড়ক মারছেন তিনজন গৃহবধূ। কিল, চড়, ঘুষি থেকে শুরু করে চুলের মুঠি ধরে মারধর দেখলেন পথচলতি মানুষ। এমন পরিস্থিতি দেখে সকলেই হতবাক। কী এমন ঘটল? যার জেরে ব্যাপক মারধর চলছে শীতের রাতে মাঝরাস্তায়। আর মারতে মারতেই একজন গৃহবধূর লাগাতার প্রশ্ন, ‘কেন তুই বিষ খাসনি? কেন তুই মরলি না?’ মঙ্গলবার শীতের বেশি রাতে এই ঘটনা দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন পথচলতি মানুষ। কোন্নগর বইমেলার ময়দানে তখন বেশি রাতেও জমজমাট ভিড়। এরপর সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসতেই প্রকাশ্যে এল পরকীয়া প্রেমের কাহিনী। তবে গল্প হলেও সত্যি। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এই ঘটনা নিয়ে এক যুবতী গৃহবধূ পুলিশকে যা জানিয়েছেন, তাতে উঠে এসেছে প্রেম, পরকীয়া এবং প্রতারণা। পুলিশ সূত্রে খবর, মারধর করছিলেন যে যুবতী গৃহবধূ তিনি কোন্নগরের বাসিন্দা। যে যুবকটি মারধর খাচ্ছিলেন তিনি বিবাহিত এবং রিষড়ার বাসিন্দা। কয়েক বছর ধরে তাঁদের মধ্যে পরকীয়া চলছিল। এটা জানাজানি হতেই দু’পরিবারের মধ্যে অশান্তি চরমে ওঠে। বিবাহিত যুবকের স্ত্রী ছেড়ে চলেও যান। এরপর এই দুই পরকীয়ায় জড়িত প্রেমিক–প্রেমিকা সিদ্ধান্ত নেন, সংসার ভেঙে যখন নতুন করে সংসার করতে পারছেন না তখন ‘পরের জন্মে’ সেটাকে পরিণতি দেবেন। তাই ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রেমিকের রিষড়ার বাড়িতে বিষ নিয়ে পৌঁছন প্রেমিকা বধূ। গ্লাসে বিষ ঢেলে দু’জনে তা পান করে আত্মহত্যা করার সময়ই সব গোলমাল হয়ে যায়। তার জেরেই এই মারধর।
আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেসের সমর্থনে উনি রাজ্যসভায়, পদত্যাগ করা উচিত’, বিকাশ–শুভঙ্কর তরজা, জোটে কি ফাটল?
প্রেমিকা গৃহবধূর পুলিশকে দেওয়া মৌখিক বয়ান অনুযায়ী, ‘আমি তো বিষ খেয়ে নিই। কিন্তু ও আমাকে ফেলে পালায়। আর বিষও খায়নি। দু’দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আমি বেঁচে ফিরে আসি। তখনই জানতে পেরেছি ও বিষ না খেয়ে পালিয়েছে।’ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রেমিক গৃহবধূর বাড়ির সদস্যদের খবর দিয়ে গা–ঢাকা দেয় বলে অভিযোগ। ওই প্রেমিকা বধূ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ‘আমার কোনও খোঁজই ও নেয়নি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সমস্তরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে গা–ঢাকা দিয়েছিল।’
এই ঘটনা দেখে এবং সবটা প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ওই প্রেমিকা বধূ তাঁর দুই বান্ধবীকে নিয়েই এই মারধরের ঘটনা ঘটিয়েছেন। বেশি রাতে দুই বান্ধবীকে নিয়ে কোন্নগর বইমেলায় এসে দেখতে পেয়েছিলেন যুবক প্রেমিককে। তারপরই তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। চড়–থাপ্পড়, কিল–ঘুষি সঙ্গে কেন ওই প্রেমিক মরলো না? সেই প্রশ্নও তোলেন যুবতী বধূ। পুলিশকে ওই প্রেমিক অভিযোগ করেছেন, রাস্তায় ফেলে মারধর করার সময় অকথ্য অত্যাচারও করা হয়। একদা যখন সম্পর্ক ছিল তখন প্রেমিকা তিন লক্ষ টাকা চেয়েছিল। তাই তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে, দু’জনেই মৌখিক অভিযোগ করেছেন। কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।