ধৃত ডাকাতিতে অভিযুক্ত। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানার লকআপে রেখেছিল। আর আইন অনুযায়ী ওই ডাকাতকে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণনগর আদালতে। তাকে পুলিশ আদালতে নিয়ে আসে। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু আদালতে প্রবেশ করার ঠিক আগে পুলিশের হাতে সে বসিয়ে দিল মোক্ষম কামড়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাত ছেড়ে দিল পুলিশ। ওই কামড়ের যন্ত্রণায় তখন পুলিশ কুপোকাত। আর হাত ছাড়িয়ে ডাকাত পগারপার। নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ততক্ষণে আলগা হয়ে গিয়েছে। আর এই ঘটনায় তখন হইচই পড়ে গিয়েছে কৃষ্ণনগর জেলা আদালত চত্বরে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। কিছুদূরেই ডাকাতকে ধরে ফেলে পুলিশ।
এই ডাকাত বেশ কয়েকটি অপরাধের সঙ্গে জড়িত। একের পর এক সোনার দোকানে ডাকাতি থেকে শুরু করে ফাঁকা বাড়িতে হাতসাফাই সবরকম অভিযোগ রয়েছে। আজ, শুক্রবার সকালে ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হওয়া মানিক শীলকে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে নিয়ে আসা হয়। তখন সে কৃষ্ণনগর কোতওয়ালি থানার পুলিশের হেফাজতে ছিল। পুলিশ যখন একটু অন্যমনস্ক ছিল তখনই সজোরে হাতে কামড়ে দেয় মানিক ডাকাত। তারপর পালিয়ে যায় সে। পুলিশও মানিক ডাকাতের পিছনে দৌড় লাগায়। কিন্তু সে গা–ঢাকা দেয়। তবে পুলিশ চলে গিয়েছে মনে করে জায়গা স্থানান্তর করতে যেতেই ধরা পড়ে যায়। কৃষ্ণনগর আদালত চত্বরের কিছুদূরেই তখন তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।
আরও পড়ুন: দিঘা–মন্দারমণিতে চলছিল রমরমিয়ে মধুচক্র, উদ্ধার সাতজন যুবতী, গ্রেফতার চার
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ কোনও অপরাধী পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যাচ্ছে মানে কর্তব্যে গাফিলতি ধরা হয়। এই ঘটনার পর পুরো বিষয় নিয়ে কৃষ্ণনগর ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শতদল দত্ত জানান, ওই ডাকাতকে আদালতে তোলার কথা ছিল। হঠাৎ পুলিশ কর্মীর হাতে কামড় বসিয়ে দৌড় লাগায় সে। এখানের আদালতের আইনজীবীরাও মানিক ডাকাতকে ধরার চেষ্টা করে। তারপর কিছুটা দূরেই জায়গা বদল করতে গেলে কৃষ্ণনগর সেন্ট্রাল নার্সিংহোমের সামনেই ধরা পড়ে যায়। আদালতের আইনজীবীরা জানান, এমন ঘটনা আগে এই আদালতে ঘটেনি।
এই ডাকাতের আগে পালানোর ইতিহাস আছে। তারপরও পুলিশ কেন কড়া হাতে ধরে রাখা হল না? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেখানে এত হালকাভাবে অভিযুক্তকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। আজ দ্বিতীয়বার ডাকাতকে ধরে ফেলার পর আদালতে পেশ করে পুলিশ। ধৃত মানিক ডাকাতকে পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয় আদালতে। এবার ধৃতের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে গোটা ঘটনায় আদালত চত্বরে আলোড়ন পড়ে যায়।