সাধুসন্তদের কথা অনুযায়ী, ১৪৪ পর এসেছে এমন পুণ্য যোগ। তাই এই সুযোগ এমনি চলে যেতে দিতে নারাজ সকলেই। সুতরাং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেছেন। বাংলার নাগরিকরাও কুম্ভস্নান করতে বেরিয়ে পড়েছেন। ট্রেন, বাস থেকে শুরু করে অনেকে গাড়ি ভাড়া করে ছুটছেন পুণ্য অর্জন করতে। তার জেরে দেদার ভিড় বাড়তে শুরু করেছে পড়শি রাজ্যে। বাংলার নানা প্রান্ত থেকে কুম্ভে যাওয়ার হিড়িক তুঙ্গে উঠেছে। পরিবার নিয়ে অনেকে পৌঁছে যাচ্ছেন। আর এই যাওয়ার আগে বিস্তর খোঁজখবর নিচ্ছেন।
এখন এই সুযোগটি নিয়েছে রেল। কুম্ভস্নানের জন্য বাড়তি ট্রেন পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে মানুষের উৎসাহও বাড়ছে কুম্ভস্নান করার জন্য। আর তাই রোজই কুম্ভস্নানের উদ্দেশ্যে প্রয়াগরাজে পাড়ি দিচ্ছেন বাংলা–সহ অন্যান্য রাজ্যের হাজার হাজার পুণ্যার্থী। কদিন আগেই এই কুম্ভের পদপিষ্টের ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। মৃত্যুর সংখ্যা যোগী আদিত্যনাথ সরকার চেপে দিচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সেই অতীতের কথা মনে রাখতে নারাজ পুণ্যার্থীরা। তবে তখনও বাংলার বেশ কিছু পুণ্যার্থী আহত হয়েছিলেন এবং প্রাণও গিয়েছিল অনেকের। আর এবার সেই কুম্ভে যাওয়ার পথেই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিনজনের।
আরও পড়ুন: ‘সর্বস্তরকে উপকৃতই এবারের বাজেটের অভিমুখ’, বড় ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী
গত ৯ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার টামনা থানা এলাকার চাকলতোড় মোড় থেকে পুণ্যার্থীদের নিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস রওনা দেয় প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় যোগ দেওয়ার উদ্দেশে। কিন্তু সে যাওয়া আর হল না। আর এখানেই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন পুণ্যার্থীরা। এত বড় বিপদ যে ঘটবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ওই বাসেই গোপলাডি গ্রামের ১৩ জন পুণ্যার্থী ছিলেন বলে সূত্রের খবর। সকালবেলায় সে পথ দিয়ে গিয়ে প্রয়াগরাজের উতারামপুর থানা এলাকার ভগবতী পেট্রল পাম্পের নিকট বাসটি দাঁড়ায়। সেখানে শৌচকর্ম করার জন্য কয়েকজন বাস থেকে নেমে পড়েন। ওই অবস্থাতেই তাঁদের একটি গাড়ি সজোরে ধাক্কা মারে।
এই গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থালেই মৃত্যু হয় গোপলাডি গ্রামের তিনজন পুণ্যার্থীর। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কুম্ভ যাওয়া আর তাঁদের হল না। এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। কুন্তী মাহাতো(৬৮), আল্পনা মাহাতো (৪৭) এবং জাগুঁড়ি মাহাতোর (৪৯) মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে কুন্তী এবং আল্পনা সম্পর্কে শাশুড়ি ও বৌমা। এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। খবর গ্রামে আসতেই গোটা এলাকায় শোকের জেরে কান্নার রোল ওঠে।