রাজনৈতিক উত্তাপ যত বাড়ছে, তত পূর্ব মেদিনীপুরে ‘অরাজনৈতিক’ সভা যেন বেড়েই চলেছে। তারই রেশ ধরে এবার হলদিয়ায় ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চে একইসঙ্গে হাজির হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং সিপিআইএমের প্রাক্তন নেতা লক্ষ্মণ শেঠ। তাতেই জেলায় নয়া রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস পাচ্ছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১৩১ তম জন্মবার্ষিকীতে হলদিয়ার দুর্গাচক টাউন ক্লাবের মাঠে একটি ‘অরাজনৈতিক’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার মধ্যেই সেই মঞ্চে মোটের উপর ‘অরাজনৈতিক’ কথা বলেন কুণাল এবং হলদিয়ায় এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ। যিনি বরাবরই 'শুভেন্দু বিরোধী' হিসেবে পরিচিত।
তবে একই মঞ্চে দু'জনের উপস্থিতিতে রাজনীতির কিছু দেখেননি কুণাল। তিনি জানান, সাংবাদিকতার সূত্রে দীর্ঘদিন লক্ষ্মণের সঙ্গে আলাপ তাঁর। বিধানসভার অধিবেশন নিয়ে যখন খবর করতে যেতেন, সেই সময় সাংবাদিকদের গ্যালারির সামনে বসতেন প্রাক্তন সিপিআইএম নেতা। কাজের সূত্রে বিভিন্ন নথিপত্র দিয়ে তিনি সাহায্যও করেছিলেন বলে জানান কুণাল। একইসঙ্গে বলেন, ‘এই অরাজনৈতিক সভা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না বলে আশা করছি।’ লক্ষ্মণের মুখে ‘রাজ্য-রাজনীতি’ নিয়ে কোনও কথা শোনা না গেলেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।
তবে শুভেন্দু-পর্বের মধ্যেই একই মঞ্চে কুণাল ও লক্ষ্মণের উপস্থিতি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, শুভেন্দু ‘ক্লোজড’ চ্যাপ্টার হয়ে যাওয়ায় কি পূর্ব মেদিনীপুরে কিছুটা নয়া কৌশল নিচ্ছে তৃণমূল? তারই অঙ্গ হিসেবে কি বর্তমান কংগ্রেস নেতাকে দলে টানা হচ্ছে? যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, সেই কৌশল হিতে বিপরীতও হতে পারে। কারণ লক্ষ্মণের সঙ্গে ‘যোগ’ বাড়লে জমি আন্দোলনের জেরে তৃণমূলের কাছে যে ভোট আসত, তা পুরোপুরি হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরে এখন লক্ষ্মণের সেভাবে দাপটও নেই। সেই পরিস্থিতিতে একই মঞ্চে কুণাল ও লক্ষ্মণের উপস্থিতি নেহাতই ‘অরাজনৈতিক’ নাকি তার পিছনে কোনও কারণ আছে, তা আগামিদিনে বোঝা যেতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের।