সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের রহস্যমৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড়। তার মধ্যে লালনের প্রিয় কুকুরকে নিজেদের ঘরে ফিরে পেতে চাইছে তার মেয়ে–স্ত্রী। কিন্তু সরকারি বিধি মেনে সিউড়ির ভট্টাচার্য পাড়ায় বেড়ে উঠছে কুকুরটি। লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি বলেন, ‘আমার স্বামী ক্রশবিড কুকুরটিকে দু’বছর আগে বাড়িতে এনেছিল। নাম দিয়েছিল টপি। সে আমাদের নয়নের মণি। ঘটনাচক্রে সেই কুকুরকে ছেড়ে ঘর বন্ধ করে আমাদের পালাতে হয়েছিল। তারপর আর কিছু জানি না। আমরা রামপুরহাট থানায় অনুরোধ করেছি আমাদের প্রিয় টপিকে ফিরে দেওয়ার।’ এখন সিউড়িতে অলোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে পালিত হচ্ছে টপি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? লালন শেখের টপি এখন সিউড়িতে অলোক ভট্টাচার্যের কাছে এসেছিল। গত ২১ মার্চ ভাদু শেখ খুন হয়। লালন শেখ ভাদুর ডান হাত হওয়ায় সেদিন গোটা গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। অভিযোগ, লালন শেখ ওই গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড। তারপর থেকেই বাড়িতে তালা মেরে বেপাত্তা হয়ে যায় লালন ও তার পরিবার। সেখানেই আটকে থাকে তাদের প্রিয় টপি। সিবিআই লালনের পোষ্যকে উদ্ধার করে প্রতিবেশী অলোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে রেখে যায়। তখন থেকেই সেখানে বেড়ে উঠছে টপি।
আর কী জানা যাচ্ছে? পরিবার পালিয়ে যেতে কুকুরটি শুধু কেঁদে বেড়াচ্ছিল। মালিক লালন শেখের খোঁজ করে। জুটছিল না খাবার। ন’দিন পরে সিবিআই লালন শেখের বাড়িতে হার্ড ডিক্সের খোঁজ করতে আসে। তখন আটকে পড়া টপি তাদের পায়ের কাছে এসে লুটিয়ে পরে। সিবিআই তাকে উদ্ধার করে তাদের প্রতিবেশীর হেফাজতে রেখে দেয়। সেখানেই আছে লালনের পোষ্য টপি। আর এখন তাকেই ফিরে পেতে চাইছেন লালনের স্ত্রী ও মেয়ে।
ঠিক কী বলছেন প্রতিবেশী? সিউড়ির ভট্টাচার্য পাড়ার বাসিন্দা অলোক ভট্টাচার্য এই বিষয়ে বলেন, ‘লালনের টপি আমার বাড়িতে জিমি নামে পরিচিত। সে আমার কাছেই থাকে। শীতে আমার খাটেই ঘুমায়। আমি তাকে গুলু বলেও ডাকি। যেখানে যাই গুলু আমার সঙ্গে যায়।’ কিন্তু লালনের মেয়ে রুকসারা খাতুনের কথায়, ‘আমরা সবে চারদিন হল নিজেদের বাড়িতে ফিরেছি। ঘরে বাবা নেই। টপি নেই। কিছু ভাল লাগছে না।’ আর লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি বলেন, ‘আমরা টপিকে ফিরে পেতে চাই।’