তমলুকের পর শিলিগুড়িতে একই ছবি দেখা গেল। বামেদের মিছিলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে গেল। পুলিশের সঙ্গে রীতিমত ধস্তাধস্তিতে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিলিগুড়ির রাস্তা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বাম কর্মীরা। ঠেলে গার্ডরেল ফেলে দিয়ে এগিয়ে যায় বামপন্থী বিক্ষোভকারীরা। শিলিগুড়ি পুরসভা ঘিরে এদিন অভিযানের কর্মসূচি নিয়েছিল বামেরা। আর সে খবর থাকায় সেখানে উপস্থিত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। বামেরা শিলিগুড়ি পুরসভায় পৌঁছতেই সতর্ক করে পুলিশ প্রশাসন।
ঠিক কী ঘটেছে শিলিগুড়িতে? বামেদের মিছিল পুরসভার দিকে এগিয়ে যেতেই মিছিলের পথ আটকায় পুলিশ। গার্ড রেল দিয়ে পুরসভার রাস্তা ঘিরে রাখা হয়। বাধা সরিয়ে পুরসভায় ঢুকতে চেষ্টা করলে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত ব্যারিকেড ভেঙেই পুরসভা চত্ত্বরে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। একাধিক অভিযোগকে কেন্দ্র করে আজ পুরসভা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামেরা। ব্যারিকেড ভেঙে পুরসভা চত্বরে ঢুকে পড়েন বেশ কিছু বিক্ষোভকারী। যাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি থেকে রণক্ষেত্রের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
কেন এই বিক্ষোভ কর্মসূচি? এদিন বিক্ষোভের মূল বিষয় ছিল, ২০১২ সালের একটি মামলায় দোষীদের শাস্তির দাবি, পুরসভার কোন কাজকর্ম না হওয়ার অভিযোগ, উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাবার অভিযোগ, এছাড়া রাস্তাঘাট পরিষ্কার না করা, পার্কিং সমস্যা–সহ একাধিক অভিযোগ তুলেই বামেদের প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত হয়েছিল। এদিনের এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক জীবেশ সরকার এবং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক–সহ বাম নেতা কর্মীরা।
তারপর সেখানে কী ঘটল? পুরসভার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগকে কেন্দ্র করে আজ শিলিগুড়ি পুরসভা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামেরা। মিছিল শিলিগুড়ির লালমোহন মৌলিক ঘাট থেকে শুরু করে পুরনিগমে পৌঁছে বিক্ষোভ দেখায় বিক্ষোভকারীরা। এই অভিযান ঘিরে পুরনিগম চত্ত্বরে তুমুল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী এগিয়ে এলে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। শিলিগুড়ির পুরনিগমের নির্বাচনে বামেদের হারিয়ে এককভাবে বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বামেদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিলেও তৃণমুল কংগ্রেস নির্বাচনের পর তার একটিও পালন করেনি।
কে, কী বলেছেন ঘটনা নিয়ে? এই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি নিয়ে বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার একটিও পালন হয়নি। তাই আজ মানুষ বর্তমান বোর্ডের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। আগামীদিনে আরও বড় আন্দোলন হবে।’ পাল্টা মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। আমাদের ক্ষমতা ছিল চাইলে পাঁচ মিনিটেই বিক্ষোভ খালি করে দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী তাই করিনি। আগামী দিনে আমরা মানুষকে নিয়ে এর প্রতিবাদ করব।’