আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে জোর ধাক্কা খেল বিজেপি। আর তৃণমূল কংগ্রেস বামেদের কাছে পরাজয়ের মুখ দেখল। রাজ্য–রাজনীতিতে এখন এটাই চর্চিত বিষয়। তাহেরপুর পুরসভার উপনির্বাচন জিতেছিল বামেরা। তারপর পলাশীপাড়ার সমবায় নির্বাচনেও লাল ঝান্ডা উড়েছিল আকাশে। এবার তেহট্ট সমবায় নির্বাচনেও বামেদের বিপুল জয়ে গ্রামবাংলার রক্তে লাল বুঝিয়ে দিল তাঁরা। কারণ এখানে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছে বামেরা। তেহট্ট সমবায় নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারল না বিজেপি। আর তৃণমূল কংগ্রেস কয়েকটি আসন পেলেও পরাজিত হয়েছে।
এই তেহট্ট সমবায় নির্বাচনে ছিল ৭২টি আসন। সেগুলির মধ্যে ৬৬টি আসন জয়লাভ করেছে বামেরা। ৬টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর বিজেপি শূন্যে নেমেছে। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ফলাফল পরে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে এসে সভা করে গিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। নদিয়ায় তিনি সভা করার পরও সমবায় নির্বাচনেই শূন্য। তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি হবে? এটাই এখন পদ্ম পার্টির কাছে কাঁটায় রক্তাক্ত হওয়ার সামিল প্রশ্ন। আর তৃণমূল কংগ্রেস বড় ব্যবধানে হারলেও ৬টি আসন পেয়েছে। এটাই সান্ত্বনা। তবে খাতাই খুলতে পারেনি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে সমবায় নির্বাচনের ফলাফলকে তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বলে দাবি করতে শুরু করেছেন নদিয়ার বাম নেতৃত্ব। রবিবার তেহট্ট কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়। ওই সমবায়ে মোট আসন সংখ্যা ৭২টি। ভোটার সংখ্যা ১,৭৯৯। সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামেরা। এখানে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি শক্তিশালী হলেও মাত্র ৩৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তারা। ভোট গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই একের পর এক আসন বামেদের ঝুলিতে যেতে থাকে। খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। আর মাত্র ৬টি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। তফসিলি সংরক্ষিত ১০টি আসনের ১০টিতেই বড় ব্যবধানে জয়ী হন বাম প্রার্থীরা। সিপিএম নেতাদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ফল বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে তাঁদের।
অন্যদিকে এই জয় নিয়ে লাল আবির মেখে বিজয় উৎসব করে বামেরা। সিপিএমের দক্ষিণ অঞ্চল কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, ‘অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট হলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল কেমন হবে সেটা তেহট্টের ভোটাররা দেখিয়ে দিলেন।’ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি বিশ্বরূপ রায় বলেন, ‘এই ফলাফল প্রত্যাশিত। নিজেদের পরিবারের সদস্যদের ভোটার করে সমিতি দখলের ছক আগেই করেছিল বামেরা।’ বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য সৌমেন সরকারের সাফাই, ‘আমরা প্রথম এই সমবায় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছি। এটাই আমাদের কাছে বড় জয়।’