দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে হাওড়া স্টেশনের একাধিক প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ ও সংস্কারের কাজ। রেলের কর্তারা বলছেন, এই কাজ শেষ হয়ে গেলে যাত্রী পরিষেবার মান আরও বাড়বে। সবথেকে বেশি সুবিধা হবে দূরপাল্লার ট্রেনগুলি চালানোর ক্ষেত্রে।
এক্ষেত্রে হাওড়া স্টেশনের ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের নয়া রূপ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মটির দৈর্ঘ্য কম থাকায় এত দিন সর্বাধিক ১২ কোচের ট্রেনই এই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে পারত। কিন্তু, বর্তমানে এই প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য এতটাই বাড়ানো হচ্ছে যে আগামী দিনে এখানে ২২ বা ২৪ কোচের দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনও দাঁড়াতে পারবে এবং গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিতে পারবে।
এছাড়াও, ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে। কারণ, এত দিন পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মটি মূলত সেলুন কারের জন্য ব্যবহার করা হত। কিন্তু, নয়া নির্মাণকাজ শেষ হলে এই প্ল্যাটফর্ম থেকেই জরুরি ভিত্তিতে অ্যাক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেন চালানো হবে। পরিবর্তে হাওড়া স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হবে সেলুন কার চালানোর জন্য।
প্রসঙ্গত, হাওড়া স্টেশনের ১৫ ও ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৩০০ মিটার। তা বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুন (৫৯০ মিটার) করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সম্প্রতি হাওড়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ তথা সংস্কারের কাজ পরিদর্শন করতে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, রেকর্ড সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা থাকলেও গুণমানের সঙ্গে কোনও আপস করা হচ্ছে না। সর্বোচ্চ গুণমান বজায় রেখেই প্ল্যাটফর্মগুলিকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি, অন্য়ান্য পরিকাঠামোও আগের তুলনায় আরও উন্নত করা হচ্ছে। যাতে যাত্রীদের আরও ভালো পরিষেবা দেওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, হাওড়া স্টেশনে মোট ২৩টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। যা সারা দেশের মধ্য়ে সর্বাধিক। প্রতিদিন গড়ে ১০ লক্ষ যাত্রী এই স্টেশন হয়ে যাতায়াত করেন। ফলে এটি দেশের অন্যতম ব্যস্ত রেলওয়ে স্টেশনও বটে। বর্তমানে প্রতিদিন ৪৫০টি শহরতলির ট্রেন এবং ১০৭টি দূরপাল্লার ট্রেন এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করে।
সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই যাত্রীদের কাছে সম্পূর্ণ নয়া রূপে ধরা দেবে হাওড়া স্টেশন। রেল মন্ত্রকের তরফে অন্তত তেমনটাই লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
রেলের উদ্যোগে খুশি যাত্রীরাও। বিশেষ করে যাঁদের মাঝেমধ্যেই দূরে যাতায়াত করতে গিয়ে হাওড়া স্টেশনে আসতে হয়, তাঁরা প্ল্যাটফর্ম সংস্কারের এই কাজের সিদ্ধান্ত সন্তোষ প্রকাশ করছেন। একইসঙ্গে, স্টেশনের পরিকাঠামো আরও আধুনিক হলে তাঁরা আরও ভালো পরিষেবা পাবেন বলে আশা করছেন।