নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় ক্রমেই চড়ছে রাজনীতির পারদ। এই ঘটনায় এবার সরব হল কেন্দ্র। রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। একই সঙ্গে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে এসে স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু, রিপোর্ট দিতে দেরি হলে সংসদীয় বিধি মেনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: 'কোনও অপ্রীতিকর...,' উত্তরবঙ্গে BJP নেতাদের উপর হামলা,বিশেষ বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
দুর্যোগ পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গ পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার সকালে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন রিজিজু। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি উত্তরবঙ্গে এসেছেন। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে এবং রাজ্যের প্রশাসনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দু’জনেই সড়কপথে মিরিকের দিকে রওনা হন। দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তার কথায়, মঙ্গলবার সারা দিনজুড়ে একাধিক সরকারি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন রিজিজু। রাতে তিনি শিলিগুড়িতে অবস্থান করবেন। আর বুধবার সকালে যাবেন বিজনবাড়ি ও আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে।
প্রসঙ্গত, সোমবার নাগরাকাটায় দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘুরতে গিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়েন খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। পাথর ছোড়া ও হাতাহাতিতে গুরুতর জখম হন সাংসদ, আহত হন শঙ্কর ঘোষও। এ প্রসঙ্গে রিজিজু বলেন, এটা শুধু সাংসদ-বিধায়কের নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা রাজ্যের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
তিনি আরও জানান, লোকসভার স্পিকার সোমবারই রাজ্য সরকারের কাছে নোটিস পাঠিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা না পড়লে ‘স্বাধিকারভঙ্গ’-এর নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, এই হামলার ঘটনার পর সোমবার রাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে বিরোধী সাংসদ-বিধায়কদের নিরাপত্তা নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই পোস্টের জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি করছেন। ফলে নাগরাকাটার হামলার পর উত্তরবঙ্গের মাটিতে রাজনীতি ও রাজ্য কেন্দ্রের সংঘাত আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।