লকডাউনে ‘এমবিএ চাওয়ালা’র কথা জানতে পেরেছিলেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এবার নিজেই করে দেখালেন। ইংরেজিতে এম এ পাশ করে হাবরা স্টেশনে টুকটুকি খুলেছেন চায়ের দোকান। সংসারের হাল ধরেছেন চা বিক্রি করেই। প্রমাণ করে দিয়েছেন, কোনও কাজই ছোটো নয়। টুকটুকির এই উদ্যোগ দেখে এগিয়ে এসেছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সবরকম সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।
হাবরা স্টেশনে যদি কেউ যান, একটা দোকানের সামনে ব্যানার চোখে পড়বেই। সেখানে লেখা আছে, ‘এম এ ইংলিশ চাইওয়ালি’। স্টেশনেই চায়ের দোকান খুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন টুকটুকি দাস। তবে এই চায়ের ব্যবসা শুরু করার কাজ খুব একটা মসৃণ ছিল না। বাবা পেশায় একজন ভ্যান চালক, মায়ের একটি মুদির দোকান আছে। বাবা–মায়ের অমতেই চা বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন টুকটুকি। প্রথমদিকে জায়গা পাওয়াই কঠিন হয়ে যাচ্ছিল, পরে ঠিক হয় স্টেশনেই দোকান খুলবেন। টুকটুকির দোকানে পাওয়া যায় হরেক রকমের চা। এলাচ চা, এলাচ আদা চা, এলাচ দারচিনি চা থেকে শুরু করে কেশর চা, চকলেট চা সবকিছুই।
এর আগে মধ্যপ্রদেশের লাবরাভদা গ্রামে কৃষকের ছেলে প্রফুল্ল বিল্লোর তিন বছর ধরে কমন অ্যাডমিশন টেস্টে প্রস্তুতি নেওয়ার পরও যখন সফল হলেন না, তখন চায়ের স্টল খুলে ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সারা দেশে এখন তাঁর ২২টির বেশি আউটলেট রয়েছে। এবার টুকটুকিও তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সেই পথেই হাঁটতে শুরু করেছেন।
ইতিমধ্যে টুকটুকির এই কীর্তির কথা জানতে পেরেছেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রবিবার তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। রাজ্যের মন্ত্রী জানান, যেভাবে মহিলাদের স্বনির্ভরতায় এগিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে টুকটুকির এই প্রচেষ্টার কথা শুনে খুশি হবেন তিনি। মন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিলেও চাকরি কার্যত প্রত্যাখ্যানই করেছেন টুকটুকি। ‘এম এ ইংলিশ চাইওয়ালি’র দোকানকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে বিষয়ে সাহায্য চেয়েছেন তিনি।