স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছেন হুগলির পুরশুড়ার বাসিন্দা মধুমিতা পাল। সেই মামলা চালাতে টাকা জোগাড়ের জন্য নিজের রক্ত বিক্রি করেন তিনি। তবে তাঁকে রক্ত দিতে হয়নি। এই খবর জানাজানি হতেই এবার উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
জানা যায়, অভিযোগকারী মধুমিতার বাড়ি পুরশুড়া থানার ভাঙামোরায়। তাঁর অভিযোগ, স্বামী তাঁর ওপর অনেকদিন ধরেই অত্যাচার চালাত। তাঁর বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য দিনের পর দিন চাপ সৃষ্টি করত। তাঁকে মারধর করা হত। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির তরফে সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন মধুমিতা। কিন্তু পুলিশের তরফে কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। প্রথমে পুরশুড়া থানায় অভিযোগ করেন ওই মহিলা। এরপরে পাণ্ডুয়া থানায় তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও লাভই হয়নি। অগত্যা আদালতের দ্বারস্থ হন মধুমিতা। কিন্তু মামলার জন্য খরচ চালাবেন কীকরে, তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত মামলার খরচ চালাতে সোমবার তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে রক্ত দিতে যান মধুমিতা। কিন্তু হাসপাতালে থাকা কিছু কর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা তাঁকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানান, ‘তারকেশ্বর হাসপাতালে কোনও ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। তাই কেউ রক্ত দিতে এলে আমরা নিতে পারব না।’ অ্যাম্বলেন্স চালকরা জানান, সরকারি হাসপাতালে এভাবে রক্ত দেওয়া যায় না। সেই কথাই ওনাকে বোঝালাম। শেষ পর্যন্ত রক্ত দিতে না পেরে হতাশ হয়েই ফিরতে হয়েছে মধুমিতাকে। তাঁর মতে, ‘মামলা চালাতে তো টাকা লাগে। সবাই টাকা চায়। কিন্তু কোথা থেকে এত টাকা পাব? আমি একটা ভাড়া বাড়িতে থাকি। মামলা চালিয়ে সংসার চালাতে পারছি না। কী করব বুঝে উঠতে না পেরে রক্ত দিতে চলে এসেছিলাম। ছেলেমেয়েরা বাপের বাড়িতে রয়েছে। আমার অনেক জিনিস শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে। ওরা সব আটকে রেখেছে।’ মেয়েটি যাতে শ্বশুরবাড়িতে থাকা জিনিসগুলি পেতে পারে, সেজন্য ইতিমধ্যে উদ্যোগী হয়েছে পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের ইতিমধ্যে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।