আজ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় উৎসাহ দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে অভিভাবকরাও। কিন্তু এই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে উঠল প্রসব–যন্ত্রণা। মাধ্যমিকের পরীক্ষা চলাকালীন এমন ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়ে যায়। তখন পুলিশের সহযোগিতায় ওই মাধ্যমিকের ছাত্রীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হল। আজ, সোমবার সেই হাসপাতালের শয্যায় বসেই পরীক্ষা দিল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এই ঘটনা এখন চর্চিত হচ্ছে সর্বত্র।
আজ মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই তা হয়েছে। সকাল থেকেই এই পরীক্ষার জন্য ব্যস্ত সকলেই। আর মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ওই ছাত্রী কান্দির বাঘডাঙা রামেন্দ্র সুন্দর বিদ্যাপীঠের ছাত্রী। কিন্তু পরীক্ষা দিতে যখন এসেছিল তখন সব ঠিকই ছিল। পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। দ্রুত ওই বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়। ছুটে আসেন কান্দি থানার পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তারা। দ্রুততার সঙ্গে ওই ছাত্রীকে ভর্তি করা হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। তবে ওই হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেয় অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথমেই পথ দুর্ঘটনায় আহত দুই ছাত্রী, হাসপাতালে বসে দিচ্ছে প্রশ্নের উত্তর
এই ঘটনা তার পরিবারকেও জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে ওই ছাত্রীর মা। তারপর ছাত্রীর মা এই বিষয়ে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। পরীক্ষা দিতে গিয়ে এবার প্রসব যন্ত্রণা হল। স্কুলকে সবকিছু বলা হয়েছিল। পুলিশ এসে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছে। হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিয়েছে মেয়ে। এখন সুস্থ আছে। আমি মেয়ের সঙ্গে এখানে এসেছি।’ কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তো নাবালিকা। তাহলে বিয়ে দেওয়া হল কেন? ছাত্রীর মায়ের জবাব, ‘বাড়িতে দেখাশোনার কেউ নেই। অর্থের অভাব। তাই বিয়ে দেওয়া হয়।’
এমন ঘটনা যে পরীক্ষার সময় ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। যখন রাজ্য সরকার মেয়েদের পড়াশোনার জন্য নানা পদক্ষেপ করেছে তখন এমন ঘটনা সত্যিই ভাবিয়ে তুলেছে। মুর্শিদাবাদে নাবালিকাদের বিয়ে নতুন কিছু নয়। এখানে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ের একটা প্রচলন আছে। যে বয়সে মেয়েদের বইয়ের ব্যাগ নিয়ে স্কুলে গিয়ে শিক্ষা নেওয়ার কথা তখন সংসারের ভার চলে আসা মোটাই স্বাভাবিক বিষয় নয়। তবু এখানে এমন ঘটে থাকে। আর কম বয়সের মেয়েদের অভিভাবকরা বিয়ে দিচ্ছেন বলেই মুর্শিদাবাদের ছাত্রীরা নাবালিকা বয়সে মা হয়ে পড়ছে। তবে এটা একটা অংশ।