পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগেই আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ তুলেছেন এক মহিল। তাই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। তারইমধ্যে ওই মহিলার গোপন জবানবন্দী হয়েছে। রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগও তুলেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ISF বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে, বাহিনী এল দুয়ারে
গত বুধবার নওশাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন ওই মহিলা। বৃহস্পতিবার বিচারভবনের দুই নম্বর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারকের কাছে তিনি গোপন জবানবন্দী দিয়েছেন। ওই মহিলা প্রথমে নিউ টাউন থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে বউবাজার থানায় অভিযোগ জমা পড়ে। তার ভিত্তিতে নওশাদের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের মামলা রুজু করে পুলিশ। একটি মহলের দাবি, ওই মহিলা মুর্শিদাবাদ ডোমকল শহরের তৃণমূলের সম্পাদক ছিলেন। মহিলাকে তৃণমূলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলাম এবং ব্লক সভাপতি হাজিকুল ইসলামের পাশেও বেশ কয়েকবার দেখা গিয়েছে।
বিধায়কের বক্তব্য, ‘ওই মহিলা তৃণমূলের ডোমকল শহরের সম্পাদিকার দায়িত্বে ছিলেন। সেটি পুর এলাকা। এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।’ মুর্শিদাবাদের জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিনহা রায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওই মহিলাকে চেনেন না। ষড়যন্ত্রের প্রশ্নে শাওনি বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করছে। সেটা পুলিশই বলতে পারবে।’
এই অভিযোগের ভিত্তিতে নওশাদের দাবি, রাজনীতির ময়দানে পেরে না উঠে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই ঘটনা আদৌও সত্য কিনা তা পরে ঠিক জানা যাবে। যদিও ওই মহিলা মুখ খুলতে চাননি। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘সঠিক সময়ে আমরা সংবাদমাধ্যমের সামনে সবকিছু বলব।’
ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা জানিয়েছেন, ‘বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগে বেশ কয়েকবার বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অবিলম্বে নওশাদকে গ্রেফতার করা উচিত।’ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন নওশাদ। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারব্যবস্থার ওপর আমার আস্থা রয়েছে। আমার আইনজীবীরা আইনি পথে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আইনের ব্যবস্থাতেই আমি অভিযোগ মুক্ত হব।’
অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন সাগরদিঘির সদ্য কংগ্রেসত্যাগী বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। তিনি নোংরা ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘রাজনীতিতে নোংরা ঘটনায় কাউকে জড়িয়ে ফেলে অপদস্থ করা ঠিক নয়। তাহলে ভদ্র শিক্ষিত মানুষ রাজনীতিতে আসবে না। আমার বিরুদ্ধেও ভোটের সময় এই অভিযোগ করা হয়েছে। রাজনীতিতে সুস্থ এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রেখে চলা উচিত।’