রথের চাকা গড়াবে না। প্রথম ঢেউয়ে গড়ায়নি। দ্বিতীয় ঢেউয়েও গড়াবে না। তাই হতাশ ভক্তকুল। করোনা কাঁটায় আটকে গেল মাহেশের রথের চাকা। এই পরিস্থিতিতে রথযাত্রার অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করল মাহেশ জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ড। আর তাতেই হতাশ হয়ে পড়ল ভক্তকুল। আগামী ১২ জুলাই রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেও ভক্ত ছাড়া এবার রথযাত্রা হবে শ্রীক্ষেত্রে। অতিমারী আবহে ৬২৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের জন্য বন্ধ হয়েছিল মাহেশের রথযাত্রা। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। করোনা আবহে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার রথের চাকা গড়াবে না হুগলির মাহেশে।
এবার মাহেশের রথযাত্রার ৬২৫ বছর। মার্টিন বার্ন কোম্পানির নির্মিত লোহার রথের বয়স ১৩৬ বছর। আগে ছিল কাঠের রথ। মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত পুত্র পিয়াল অধিকারী জানান, মাহেশে রথযাত্রা দেখতে মানুষের সমাগম হয়। তাই সামাজিক দূরত্ববিধি মানা অসম্ভব। তাই রথযাত্রা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আগামী ২৪ জুন জগন্নাথের স্নানযাত্রা উৎসব। এবার জগন্নাথ মন্দিরেই হবে স্নানযাত্রা। প্রথা অনুযায়ী, সোজা রথের দিন জগন্নাথদেব যান মাসির বাড়িতে। আর উল্টোরথের দিন ফিরে আসেন। তাই নিয়ম রক্ষার্থে মন্দিরের মধ্যেই মাসির বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। শুধুমাত্র নারায়ণ শিলাকে মাসির বাড়ি পাঠানো হবে।
১২ জুলাই রথযাত্রা উৎসব। এখানেই থাকবেন জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রা। সেখানে পূজা অর্চনা হবে রীতি মেনে। রথের পাশে সাত পাক ঘোরানো হবে নারায়ণ শিলা। পুজো হবে রথের। এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার, লোহার ১২টি চাকা। ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথযাত্রা মাহেশের রথযাত্রা। পর পর দু’বছর করোনার থাবা সেই ঐতিহ্যে ছেদ ফেলল। শ্যমবাজারের বসু পরিবারের সঙ্গে মাহেশের অধিকারী পরিবারের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ। তাঁরা জগন্নাথ মন্দিরের সেবক। আর তাঁরাই এই রথ তৈরি করে দেন। মাহেশের এই রখ পরিচিত নীলাচল নামে। কথিত আছে, চৈতন্য মহাপ্রভু থেকে রামকৃষ্ণ দেব এই রথযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন।