মহেশতলা কলেজে অধ্যক্ষা ঘেরাও হয়ে পড়ার ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ কলেজকে রাজনীতির আখড়ায় পরিণত করতে চেয়েছেন ওই অধ্যক্ষা বলে অভিযোগ ছাত্র সংসদ সদস্যদের। তাঁদের সঙ্গে আবার বেশ কিছু পড়ুয়াও একই অভিযোগ তোলেন। এমনকী মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষার পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। আর ঘেরাও করে রাখা হয়। মঙ্গলবার দীর্ঘ সময় ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি কলেজ চত্বরে লাগিয়ে বিজেপির প্রচার করছেন অধ্যক্ষা বলে অভিযোগ তুলে মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষা রুম্পা দাসের পদত্যাগ চাইলেন সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সমর্থক পড়ুয়ারা।
গতকাল রাত পর্যন্ত অধ্যক্ষা–সহ অন্য শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের ঘেরাও করে রাখেন তাঁরা। অবশেষে অধ্যক্ষা এই বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সভানেত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি লেখার পরে সকলে বাড়ি যেতে পারেন। অধ্যক্ষার আচার–আচরণ এবং খামখেয়ালি কাজকর্ম নিয়ে ছাত্র সংসদের সদস্য ও কলেজ অধ্যাপকদের একাংশের বহুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তাই এই অধ্যক্ষাকে অনেকদিন ধরেই সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলছিলেন তাঁরা। এমনকী এই অধ্যক্ষা রুম্পা দাসের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তুষ্ট স্বয়ং বিধায়ক দুলাল দাস। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছিল।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধী সরাসরি অসম্মান করেছেন রাষ্ট্রপতিকে, ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি বিজেপির
সেখানে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগানো কেন? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষা রুম্পা দাস জানান, এদিন কলেজে ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিমের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি লাগানো হয়েছিল। তার জন্য একদল পড়ুয়া তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন। আর ঘেরাও করে রাখেন। ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিমের অনুষ্ঠান কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে হয়ে থাকে। তার জন্য প্রত্যেকটি কলেজকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে টাকা দেওয়া হয়। ছবি, পোস্টার আঞ্চলিক অফিস থেকে সরবরাহ করা হয় অনুষ্ঠানের জন্য।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ছবি কলেজে কেন লাগানো হল? এই প্রশ্ন তুলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থক পড়ুয়ারা বিক্ষোভ শুরু করেন। রুম্পা জানান, পড়ুয়ারা শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের ছাড়ছেন না শুনে এবং পরিচালন সমিতির সভানেত্রীর ফোন পেয়ে সেখানে ফিরে আসেন। তখন পড়ুয়ারা দাবি করতে থাকেন, অধ্যক্ষাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, তিনি বিজেপির হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। যদিও এটা সত্য নয় বলে অধ্যক্ষার দাবি। কিন্তু এই কলেজের বিষয়টি দেখেন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবুল সর্দার। তাঁর বক্তব্য, ‘ছাত্র সংসদ এবং অধ্যাপকদের এড়িয়ে ইচ্ছেমতো কাজ করেন অধ্যক্ষা। এবার একটি অনুষ্ঠান হয়েছে। সেটাও কলেজের ছাত্রছাত্রীদের না জানিয়ে করেছেন। বিজেপির এক ব্যক্তির ছবি সামনে রেখে অনুষ্ঠান করেছেন। সেটা উনি করতে পারেন না।’