অবশেষে ধরা পড়লেন জলপাইগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায়। গত ১৮ মে শিলিগুড়ির ‘সেবক হাউস’-এ হামলার ঘটনার পর থেকে প্রদীপের খোঁজ করছিল পুলিশ। তারইমধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হলেও প্রদীপের নাগাল মিলছিল না। সেজন্য তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল পুলিশকে। অবশেষে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি)। তুলে দেওয়া হয়েছে ভক্তিনগর থানার হাতে। যে থানায় রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
কী অভিযোগ উঠেছিল প্রদীপের বিরুদ্ধে?
গত ১৮ মে রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ শিলিগুড়ির সেবক হাউসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। পরদিন ভক্তিনগর থানায় রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাতে দাবি করা হয়েছিল যে রাতে সেবক হাউসে ৩০-৩৫ জনের দুষ্কৃতীদের একটি দল। সেখানে কয়েকজন সন্ন্যাসী থাকেন। ওই সন্ন্যাসীদের মারধর করা হয়। হুমকি দেওয়া হয় তাঁদের। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল।
শুধু তাই নয়, কয়েকজন সন্ন্যাসী ও এক জন নিরাপত্তাপক্ষীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন সংলগ্ন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী শিবপ্রেমানন্দ মহারাজ দাবি করেন, কাটারি, বন্দুক, রড নিয়ে ঢুকে পড়েছিল দুষ্কৃতীরা।
জমির মালিকানা নিয়ে মিথ্যে দাবি প্রদীপের, আগেই বলেছে পুলিশ
অভিযোগ ওঠে যে সেই ঘটনায় প্রদীপই মূল পান্ডা ছিলেন। তিনিই নিজের দলবলকে নিয়ে সেবক হাউসে হামলা চালান। যিনি দাবি করেছিলেন যে উত্তরাধিকার সূত্রে নাকি জমিটি তাঁর প্রাপ্য। যদিও পরবর্তীতে পুলিশ জানিয়ে দেয়, জমির আসল মালিক হল রামকৃষ্ণ মিশনই। আদালতেরও নির্দেশ আছে। প্রদীপ যে দাবি করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে সেবক হাউস তুলে দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক তরজা
শিলিগুড়ির সেবক হাউসে হামলার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, নিজের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীদের আক্রমণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হুমকির পরই সেবক হাউসে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মোদী।