মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে (ম্যাকাউট) এবার আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল। গত পাঁচ বছরে এখানে বিপুল সরকারি অর্থ নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। এই তথ্য সামনে আসার পর আবার আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টি প্রকট হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম এবং পদ্ধতি না মেনে ও বিকাশ ভবনের অনুমতি ছাড়াই একাধিক খাতে প্রচুর অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা হয়েছে বলে ক্যাগের পর্যবেক্ষণ। আর এই আর্থিক নয়ছয়ের ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়কালে। তাহলে এতদিন পর কেন এমন তথ্য সামনে আসছে? উঠছে প্রশ্ন।
কেমন করে অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে? ক্যাগের যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে তাতে উল্লেখ রয়েছে, টেন্ডার ডেকে তাতে সেরা সংস্থাকে সাইড করে দেওয়া হতো। আর কাজের বরাত বারবার দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে কম যোগ্যতা আছে এমন সংস্থাকে। এভাবে বিপুল অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে। আবার নিয়োগ করা হয় চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের। সেখানেও পরিকল্পনার ব্যাপক অভাব ছিল। ফলে বেতন খাতে বাড়তি দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সুতরাং এই অতিরিক্ত অর্থ যে কারও কারও পকেটে গিয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। যদিও সেটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘মমতা সেতু’ কেমন করে গড়ে উঠেছিল কোচবিহারে? বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানালেন কুণাল
ক্যাগের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, স্থায়ী শিক্ষকদের পদোন্নতিতে অনিয়ম হয়েছে। অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বেতনে বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়েছে। শিক্ষা কর্মীদের অগ্রিম নেওয়া বিপুল টাকা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পড়ে আছে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে কোথাও একটা অনিয়ম হয়েছে। অনিয়মের তালিকায় রয়েছে, কর্মীদের ওভারটাইমে প্রয়োজনীয় নোট ছাড়া বাড়তি অর্থ ব্যয় করা। এগুলি কেন করা হয়েছে? তার কোনও যুক্তিপূর্ণ উত্তর মেলেনি। উলটে ক্যাগের দাবি, নির্বাচনের সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কার্যসমিতির (ইসি) অনুমোদন ছাড়াই নিয়মিত নিয়োগ হয়েছে। সম্প্রতি এই সব অনিয়ম নিয়েন্ত ১৩২ পাতার রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠিয়েছে ক্যাগ।
এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ বিপুল পরিমাণ টাকার কোনও হদিশ নেই। আর যেসব টাকার হদিশ মিলছে সেসব খরচে অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। এই বিষয়ে ম্যাকাউটে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘যে সময় অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে, তখন আমি দায়িত্ব ছিলাম না। তবে এই বছরের জুলাই মাসে ক্যাগ অফিসারদের এক্সিট মিটিংয়ে আমি উপস্থিত ছিলাম। তখন বেশ কিছু গরমিলের নিয়ে প্রশ্ন তুলে জবাব চাওযা হয়। রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ী আমাকে বলেছিলেন, তিনি আইনি পরামর্শ মেনে জবাব দিয়েছেন।’ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজভবনের তত্ত্বাবধানে এই সব ঘটছে কিনা সেটা রাজ্যপাল স্পষ্ট করুন।’