দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) অব্যাহত রেখেছে জল ছাড়া। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার মাইথন ডিভিসি অফিসের সামনে আন্দোলনে নামেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। এদিন সেই প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকেই ডিভিসির উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দেন মলয় ঘটক। তাঁর হুঁশিয়ারি, ডিভিসির ছাড়া জলে কোনও ফসলের ক্ষতি হলে তার দায় নিতে হবে শুধুমাত্র ডিভিসিকেই। যদি কেউ প্রাণ হারায়, তাতেও দায় বহন করতে হবে ডিভিসিকেই।
আরও পড়ুন: সেচ দফতরের কাজে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, তীব্র হুঁশিয়ারি দিলেন অফিসারদের
এদিন তিনি বলেন, ‘আইনজীবী হিসেবে বলছি, রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়া হলে মৃত্যু হলে ডিভিসির বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হতে পারে।’ দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা এই ধরনার পাশাপাশি মন্ত্রী ও তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ডিভিসির আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। মলয় ঘটক আরও বলেন, ইতিমধ্যেই ডিভিসিকে সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও অবস্থার বদল না হলে কলকাতার সদর দফতরেও কর্মসূচি হবে। পাঞ্চেতেও কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিবাদ হবে। ধরনায় তোলা হয় মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারের সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ও। মলয় ঘটক দাবি করেন, ডিভিসির আধিকারিকরাও মেনে নিয়েছেন, পলি জমে যাওয়ায় জলাধারের ধারণক্ষমতা কমেছে। তবে ডিভিসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুমনপ্রসাদ সিং দাবি করেন, এবার ৭০ হাজার কিউসেকের বেশি জল একসঙ্গে ছাড়া হয়নি। ডিভিসি নিজের উদ্যোগে জল ছাড়ে না। দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটিই এই সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। জল ছাড়ার তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে জানানো হয়।
এই যুক্তি মানতে নারাজ ছিলেন রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, অফিসাররা বলেন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জানানো হয়। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ কি কখনও এত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানোর মাধ্যম হতে পারে? প্রসঙ্গত, গত জুন থেকে ধারাবাহিকভাবে হাজার হাজার কিউসেক হারে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়া হচ্ছে, যা নজিরবিহীন। রাজ্য সরকারের সরব অবস্থানের কারণে সাম্প্রতিক দিনে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে ৫৫ হাজার কিউসেক থেকে নামিয়ে আনা হয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেকে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সরব হয়েছেন। আর এবার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মলয় ঘটক।