বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জেরবার হয়ে পড়েছিলেন গ্রামের মানুষ। আর তারই প্রতিবাদ করতে পথে নেমেছিলেন তাঁরা। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ শুরু হয়। এই অবরোধ ঘিরেই তুলকালাম কাণ্ড ঘটল মালদার মানিকচকের এনায়েতপুরে। কারণ এই অবরোধ তুলতে যায় পুলিশ। তখন জনতা–পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ হয়। তাতে আক্রান্ত হয় পুলিশ। জখম হন মানিকচক থানার আইসি–সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী। তখন পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। আর সেই গুলিতে দু’জন গ্রামবাসী আহত হন। এই ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছে নবান্ন।
কেন এবং কোন পরিস্থিতিতে গুলি চালাতে হল? নবান্নের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে মালদা পুলিশ সুপারের কাছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, মানিকচক থানার আইসিকে আটকে রাখা হয়েছিল। জনতার মারে আহত হন তিনজন পুলিশকর্মী। বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে মানিকচকের একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ চলছিল। মালদা জেলার রতুয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে চলছিল বিক্ষোভ। এই অবরোধ তুলতে গিয়েই জনতা–পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। পুলিশের উপর অবরোধকারীরা হামলা করে বলে অভিযোগ। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি পুলিশকে ঘরে আটকে রেখে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কিছুদিন ধরে গ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং থাকত। বারবার দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। আর তা তুলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তখনই গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়েন পুলিশ কর্মীরা। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশকে ধাক্কা দেন এলাকার মানুষজন। তারপরই শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। মানিকচক থানার আইসি পার্থসারথি হালদারের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তখন পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। রাস্তা অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পুলিশ বিক্ষোভ তুলতে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
আরও পড়ুন: জামাল সর্দারের বাড়িতে হানা দিল বন দফতর, সোনারপুর থেকে কচ্ছপ মিলল কী?
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ। ওই গুলিতে দু’জন অবরোধকারী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের পায়ে গুলি লেগেছে। জখম অবস্থায় তাঁদের মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আগামীকাল শুক্রবার বাম–কংগ্রেস জোট ১২ ঘণ্টা মানিকচক বনধের ডাক দিয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি জেরে রক্তাক্ত হন মানিকচক থানার আইসি–সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। লাঠি নিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সক্রিয় হয় পুলিশ।
আর তখনই অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ। তাতে দুই গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। পায়ে গুলি লেগেছে তাঁদের। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। আহতরা মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মালদা জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তিন পুলিশকর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। উপস্থিত হন মালদা রেঞ্জের ডিআইজি। এই ঘটনার পরই শুরু হয় জোর ধরপাকড়। ইতিমধ্যেই পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।