মালদার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে এক ছাত্রীকে ছুরির কোপ মারল এক যুবক বলে অভিযোগ। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিল। আর সেই অবস্থাতেই ছাত্রীকে কোপ মেরে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই যুবক। দু’জনের রক্তে ভেসে গেল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সূত্রে খবর, ওই যুবক সেখানকার প্রাক্তনী। এই ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল মুর্শিদাবাদের সুতপা চৌধুরী হত্যার কথা। ২০২২ সালের মে মাসে বহরমপুরে ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে মেসের সামনে পরপর কোপ মেরে খুন করা হয়েছিল।
এদিকে এই ঘটনা প্রণয়ঘটিত কারণে ছাত্রীর উপর হামলা নাকি নেপথ্যে অন্য কোনও ঘটনা আছে তা খতিয়ে দেখছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রীর নাম তনুশ্রী চক্রবর্তী। অঙ্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন তনুশ্রী। আর আজ, বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান বিভাগের সামনেই তাঁর গলা কাটার অভিযোগ ওঠে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তনী অলোক মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে যায়। কারণ ছাত্রী তনুশ্রীর গলায় চাকু চালিয়ে দেয় অলোক বলে অভিযোগ। এমনকী তনুশ্রীর গলা কাটার পর নিজের গলাও কেটে ফেলে অলোক। রক্তগঙ্গা বয়ে যায় ক্যাম্পাসে।
আরও পড়ুন: এবার কংগ্রেস হাইকমান্ডের মুখোমুখি হতে হবে প্রদেশ নেতৃত্বকে, পরিবর্তন হবে কি সভাপতি পদে?
অন্যদিকে আজ গণিত পরীক্ষা চলছিল। তখনই এই কাণ্ড ঘটে। ছাত্রীর চিৎকার শুনে ছুটে যান ছাত্র লতিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘একটা মারাত্মক চিৎকার শুনতে পেলাম। আমরা একসঙ্গে অনেকেই ছুটে গিয়ে দেখি ছেলেটি মেয়েটির উপর বসে কোপ মারছে। আর তারপর নিজের গলাতেও কোপ বসাচ্ছে। এমন ঘটনা দেখে আমরা শিউরে উঠি। আমরা একাধিকবার ছাড়াবার চেষ্টা করি। কিন্তু ছেলেটির হাতে ছুরি থাকায় বেশি এগোতে পারিনি।’ এই ঘটনার পর দু’জনকেই উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছছে পুলিশ।
এছাড়া গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তথা ডেভেলপমেন্ট অফিসার রাজীব পুততুণ্ড জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের বিল্ডিংয়ে এটা ঘটেছে। আর অভিযুক্ত যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর হাতে একটি ছুরি ছিল। যাঁকে কোপানো হয়েছে বলে অভিযোগ, তিনিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। আক্রান্ত ছাত্রী গণিত বিভাগের। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছিল। তখন ঘটনাটি ঘটেছে। ছেলেটাকে চিনি না আমরা।’