অশান্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে হিন্দুদের উপর আক্রমণ চলছেই বলে অভিযোগ। তাই ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসতে চাইছেন পদ্মাপারে বসবাসকারী হিন্দুরা। মালদা, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁয় ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশের নাগরিকরা বলে অভিযোগ। এই আবহে মালদার হোটেল মালিকরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা হল, ওপার থেকে এপারে আসা বাংলাদেশের নাগরিকদের ঘর ভাড়া না দেবেন না তাঁরা। কারণ ওই নাগরিকরা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আসছেন, বৈধ নথি আছে কিনা—সেসব বোঝার উপায় নেই। তাই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছেন তাঁরা।
একদিকে হিন্দুদের উপর অত্যাচার নেমে আসছে। অপরদিকে ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কোনও আইনজীবীকে সন্ন্যাসীর হয়ে সওয়াল করতে দেওয়া হচ্ছে না। কেউ তা করলে সেই আইনজীবীর উপর আক্রমণ নেমে আসছে। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কোনও আইনজীবী এই মামলা লড়তে চাইলে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এই ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা মালদা। ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত মহদীপুর সীমান্ত দিয়ে দু’দেশের মধ্য়ে চলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। আর সেই পথ দিয়ে বৈধভাবেই ভারতে আসেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। কিন্তু এখন এলে এখানের হোটেলে ঠাঁই হবে না।
আরও পড়ুন: বাংলার প্রাপ্য টাকা দেয় না নয়াদিল্লি, অর্থ কমিশনের বৈঠকে কেন্দ্রের বঞ্চনায় সরব মমতা
মহম্মদ ইউনুসের তদারকি সরকার সেখানে এলেও শান্তি ফেরেনি। অথচ শান্তির জন্যই তিনি নোবেল পেয়েছেন। সেখানে এখন আক্রান্ত সংখ্যালঘু হিন্দুরা। গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তাতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এবার মালদা জেলা হোটেল ওনার্স অ্য়াসোসিয়েশনের সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসার কথা ভাবলে আমাদের লোকসান হবে। কিন্তু বাংলাদেশে যে অশান্তি চলছে, তাতে আমরা আতঙ্কিত। কারণ বৈধ কাগজপত্র নিয়েই যে বাংলাদেশীরা ভারতে আসছেন সেটা কেমন করে নিশ্চিত করা সম্ভব? আইনি সমস্যায় কেউ জড়াতে চায় না। তাই এখন বাংলাদেশ নাগরিকদের হোটেল ভাড়া দেওয়া হবে না।’
ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে রাখা হয়েছে সেখানে। তাই কোনও আইনজীবী না মেলায় জামিন পেলেন না বাংলাদেশের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। আগামী ২ জানুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রের জামিনের মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। কোনও আইনজীবীকে এগোতে দিচ্ছেন না ওখানকার বাকি আইনজীবীরা। এমন অবস্থায় হোটেল মালিকদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স। এই সংগঠনের সম্পাদক উত্তম বসাক বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন অগ্নিগর্ভ পরিবেশ। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দুষ্কৃতীরাও চোরাপথে ঢুকে পড়তে পারে। তাতে আইনি সমস্যা দেখা দিতে পারে।’