মালদা জেলার মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের গাড়ির উপর হামলার রেশ এখনও কাটেনি। ওই হামলার দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই এবার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের গাড়ির চালকের উপরে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার মাঝরাতে পুরাতন মালদার নারায়ণপুর বিএসএফ ক্যাম্পের ব্লক গেটের সামনে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। মুখে কাপড় বেঁধে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে বলে অভিযোগ। জখম অবস্থায় ওই গাড়িচালককে মৌলপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে এখন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাবিত্রী মিত্রের গাড়ির চালক অনুপ সাহা। তিনি পরিবার নিয়ে বিয়ে বাড়ি থেকে খেয়ে ফিরছিলেন। বাড়ির সকলে এগিয়ে যাওয়ায় পুরাতন মালদা ব্লক গেটের সামনে চালক অনুপ সাহা দেখতে পা তিন চারজন দুষ্কৃতী মুখ বেঁধে রয়েছে। আর তা দেখে চালক ওই দুষ্কৃতীদের ক্যামেরাবন্দি করতে গেলেই তিনজন দুষ্কৃতী তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি চাকু দিয়ে কোপাতে থাকে বলে অভিযোগ। অনুপবাবু আহত হয়ে চিৎকার শুরু করলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। আর তাঁর চিৎকারের আওয়াজ শুনে স্ত্রী–সহ পরিবারের সদস্যরা এসে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আরও পড়ুন: নতুন রূপে ট্রামকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কলকাতায়, জয়রাইড হিসেবে এবার হবে ট্রাম ব্যবহার
এদিকে খুনের চেষ্টার খবর পেয়ে আজ, শনিবার সকালে অনুপ সাহার সঙ্গে দেখা করেন মালদা থানার পুলিশ অফিসাররা। অনুপ পুলিশ কর্তাদের জানান, মাঝরাতে তিন–চার জনকে ব্লক গেটের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয়েছিল। তাই ভিডিয়ো করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেটা ওরা দেখে ফেলতেই তাঁর উপর হামলা করা হয়েছে। পুলিশ এখন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালাচ্ছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। আতঙ্কে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানুয়ারি মাসে মানিকচকের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়েছিল মালদায়। বিধায়ক অভিযোগ করেছিলেন তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে সাবিত্রী মিত্রকে না পেয়ে এবার চালকের উপর আক্রমণ করা হল। তাহলে কি সাবিত্রী মিত্রের জন্য ওখানে অপেক্ষা করছিল দুষ্কৃতীরা? উঠছে প্রশ্ন। সাবিত্রী মিত্রের গাড়িতে ধাক্কা মারা হয়েছিল। এবার চালককে কোপানো হল। এই ঘটনা নিয়ে আহত অনুপ সাহার বক্তব্য, ‘কে বা কারা কি কারণে ভোরবেলা মুখ ঢেকে ওখানে ঘোরাঘুরি করছিল আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে তাদের ভিডিয়ো ক্যামেরা করতেই তারা আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সম্ভবত আমার উপরে আক্রোশ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’ আহত চালকের স্ত্রীর কথায়, ‘এই হামলার কি কারণ আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। তবে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করছে।’