কদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দুলাল সরকার খুন হন। যার পিছনে থাকা মাথারা ধরা পড়েছে। দলের শহর সভাপতি এখন জেলে। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তিন অভিযুক্তকে জেরা করে এবার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। আজ, শুক্রবার পুলিশ দুলাল সরকার ওরফে বাবলার হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ৯ এমএম পিস্তল, দু’টি ওয়ান শটার পিস্তল উদ্ধার করেছে। এমনকী গত ২ জানুয়ারি এই অপরাধীরা যে পোশাক পরে দুলাল সরকারকে খুন করতে এসেছিল সেগুলিও মিলেছে। সুতরাং অপরাধ করে প্রমাণ লোপাটের যে ছক কষা হয়েছিল তা বানচাল হয়ে গেল।
মালদার ইংরেজবাজার পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর আসলে ছিলেন সংগঠন করা নেতা। তাই তাঁকে সরিয়ে দিতে পারলে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপদে ফেলা যাবে। এই পরিকল্পনা ছকে খুন করা হয়। তাছাড়া নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি চেয়েছিলেন দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে সরিয়ে কাউন্সিলর হতে। তাই এই হত্যার ছক। এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার হয় টিঙ্কু ঘোষ, শামি আখতার, অভিজিৎ ঘোষ–সহ সাত জন। তাদের জেরা করে খুনে ব্যবহৃত পিস্তলগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও সাতটি কার্তুজ এবং অভিযুক্তদের সে দিনের পরনে যে জামাকাপড়–জুতো ছিল সেগুলিও মিলেছে। এতে তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক সহজ হবে।
আরও পড়ুন: কণ্ঠস্বরের নমুনা দিতেই হবে ‘কালীঘাটের কাকু’কে, তারিখ নির্দিষ্ট করে দিল আদালত
দুলালের হত্যাকাণ্ডে পুলিশের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুলাল সরকার পুলিশের নিরাপত্তা পেতেন। কিন্তু কদিন আগে তা তুলে নেওয়া হয়। এই নিয়েও এখন নানা মত আছে। এই হত্যাকাণ্ডে ‘মূলচক্রী’ হিসাবে উঠে আসে তৃণমূল কংগ্রেসের মালদা শহরের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মার নাম। তাঁরা এখন পুলিশের হেফাজতে। আজ, শুক্রবার দুলাল সরকার খুনে অভিযুক্ত নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনকে আদালতে হাজির করা হয়। ইতিমধ্যেই নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই খুন করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য বারবার এলাকা পরিবর্তন করছে দুলাল সরকার খুনে দুই অভিযুক্ত রোহন রজক এবং বাবলু যাদব। শিলিগুড়ি থেকে নেপাল ও উত্তরপ্রদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। খুনের দিন ব্যবহৃত মোটরবাইকের চালক আশরাফ খান এখনও ফেরার। আশরাফই ‘শার্প শুটার’। সে দুলালের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পুলিশের তদন্তে আস্থা রেখে মৃতের স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকার বলেন, ‘এর শেষ দেখতে চাই। রাজনীতি করার সঙ্গে সঙ্গে আমি একজন আইনজীবীও। আমি এটা ভাল করে বুঝতে পারছি যে, এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত রয়েছে।’