শান্ত হও প্রকৃতি! হাতজোড় করে দুর্গাপুর ব্যারাজকে প্রণাম করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। মন কেড়ে নিয়েছে নেটিজেনদের একাংশের। সোমবার পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে বাঁকুড়ায় আসছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মাঝপথে দুর্গাপুর ব্যারেজে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। হেঁটে চলে যান ব্যারেজের ধারে। জলের উত্তাল স্রোতের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। সেইসময় বেশ জোরে হাওয়া বইছিল। তারইমধ্যে হাতজোড় করে তাকিয়ে থাকেন দুর্গাপুর ব্যারেজের জলের দিকে। মাথানত করে প্রণাম করেন মুখ্যমন্ত্রী।
DVC-কে আক্রমণ মমতার
তারইমধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি জন্য লাগাতার দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনকে (ডিভিসি) দুষে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার বীরভূমে বোলপুরে গিয়েও ডিভিসিকে আক্রমণ শানিয়েছেন। বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে মমতা সাফ জানান, ডিভিসি যদি কলকাতা থেকে সদর দফতর সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তাহলে নিয়ে যাক। তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না।
‘বিল্ডিংয়ের থেকে মানুষের প্রাণের দাম অনেক বেশি’
রীতিমতো কড়া সুরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতায় সদর দফতর রেখে দেবে, আর এদিকে কলকাতার মানুষের কথায় গুরুত্ব দেবে না। পশ্চিমবঙ্গে জল ছেড়ে দেবে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে মারবে। কোনও বিল্ডিংয়ের থেকে মানুষের প্রাণের দাম অনেক বেশি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
'ঝাড়খণ্ডের জলেই বন্যা হয় বাংলায়'
সেখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, ডিভিসির কারণেই প্রতি বছর বাংলায় বন্যা হয়। 'ম্যান মেড' বন্যা হয় বাংলায়। পশ্চিমবঙ্গে যে বৃষ্টি হয়, সেটার কারণে বন্যা হয় না। ঝাড়খণ্ডে যে জল থাকে, সেটার কারণেই প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গে বন্যা হয় বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, 'জল ছেড়ে যারা মানুষকে মারে, আমরা তাদের চাই না।'
DVC-র ৫,৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎও বন্ধ করুন, খোঁচা দিলীপের
যদিও মুখ্যমন্ত্রীকে পালটা আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। ডিভিসি থেকে পশ্চিমবঙ্গের দুই প্রতিনিধির পদত্যাগের প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন যে মুখ্যমন্ত্রী 'নাটক' করছেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন মমতা। ডিভিসির থেকে ৫,৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায় পশ্চিমবঙ্গ। সেটাও বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন বিজেপি নেতা।
তারইমধ্যে নবান্নের পাঠানো একটি মেমো সামনে এসেছে। ওই মেমো অনুযায়ী, ডিভিসি জল ছাড়লে যে বিপদ হতে পারে, তা নিয়ে দক্ষিণবঙ্গের আটটি জেলাকে সতর্ক করেছিল নবান্ন। আর সেই মেমোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘মা মাটি মিথ্যা, তার নাম মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের নামে অপপ্রচার বন্ধ করুন। আপনাকে আর কেউ বিশ্বাস করে না। করবেও না।’