মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে মমতা সরকারের— বাংলায় সফরের শুরুতেই এ কথা বলে রীতিমতো হুঙ্কার দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টারে বাঁকুড়ায় পৌঁছন তিনি। সেখানে পুয়াবাগানে বীরসা মুন্ডার মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আর সেই মঞ্চ থেকেইআসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি–র বাংলা দখলের বার্তা দিলেন তিনি।
রীতিমতো হিসেব কষে এদিন অমিত শাহ বলে দেন, ‘আগামীদিনে বাংলায় সরকার গড়ব আমরা। দুই তৃতীয়াংশ আসনে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।’ এদিন তিনি জানান, আগামীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়া হবে এই রাজ্যে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, ‘এই রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের যেভাবে খুন করা হচ্ছে, যেভাবে তাঁদের ওপর শাসকদলের দমনপীড়ন নীতি চলছে, তাতে আমি পরিষ্কার দেখতে পারছি যে মমতা সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে।’
একইসঙ্গে এদিন বাংলার মানুষের কাছে বিজেপি–কে রাজ্যে ক্ষমতায় আনার ডাকও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি এদিন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ দেশের সীমান্ত রাজ্য। দেশের সুরক্ষা আর বাংলার সুরক্ষা একই সূত্রে গাঁথা।’ দেশের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য, বাংলার যুব সম্প্রদায়ের রোজগারের ব্যবস্থা করার জন্য এবং বাংলা থেকে দারিদ্র দূর করার জন্য তৃণমূল সরকারকে তুলে ফেলে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন অমিত শাহ।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অমিত শাহর অভিযোগ, ‘কৃষকরা কেন্দ্রের পাঠানো টাকা পাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে আদিবাসীদের। এভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্প আটকে বিজেপি–কে রোখা যাবে না।’ তাঁর মতে, ‘মমতা সরকারের ওপর বাংলার মানুষ আজ বীতশ্রদ্ধ। স্পষ্ট জনরোষ দেখা যাচ্ছে।’
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলায় পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়ে এদিন বাঁকুড়া রবীন্দ্রভবনের দিকে এগিয়ে যান অমিত শাহ। সেখানে দক্ষিণবঙ্গে দলের একাধিক নেতৃত্ব এবং কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক রয়েছে তাঁর। সেখানেই ঠিক হতে পারে আসন্ন নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপি–র রণকৌশল। আগে থেকেই ওই সভায় উপস্থিত রয়েছেন অরবিন্দ মেনন, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অনুপম হাজরারা।
বৈঠক সেরে তিনি যাবেন চতুরডিহি গ্রামের বাসিন্দা আদিবাসী বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে। সেখানে সারবেন মধ্যাহ্নভোজ। জানা গিয়েছে, তাঁর মেনুতে থাকবে ভাত, ডাল, আলুভাজা, আলুপোস্ত, পোস্তর বড়া, চাটনি, পাপড়, মিষ্টি। সেখান থেকে ফের রবীন্দ্রভবনে ফিরে দুপুর ৩টে নাগাদ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন তিনি। সেখানে তিনি ডোকরা শিল্পী, ছৌ শিল্পী–সহ বিভিন্ন লোকশিল্প ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। তাঁদের অভাব–অভিযোগ শুনবেন বলে জানা গিয়েছে। তার পর হেলিকপ্টারে করেই ফিরবেন কলকাতায়। রাত্রিবাস করবেন রাজারহাটের বিলাসবহুল হোটেল ‘ওয়েস্টইন’–এ।