গরু পাচার কাণ্ডে এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছিল। এদিকে নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বারংবার সরব হয়েছেন মমতা। এরই মধ্যে এবার বিএসএফ-এর গতিবিধির ওপর নজরদারির 'দায়িত্ব' দেওয়া হল স্থানীয় ক্লাবগুলিকে। যা নিয়ে চরমে বিতর্ক। বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ক্লাব প্রীতি'র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। ক্লাবদের টাকা দেওয়া নিয়ে মামলা গড়িয়েছে হাই কোর্টে। প্রশ্ন উঠেছে, যে সরকার নিজের কর্মীদের ডিএ দিতে পারে না, সেই সরকার কেন ক্লাবগুলির পিছনে এত খরচ করছে? রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের ব্যবহার করতেই কি সরকারি টাকায় এই উদ্যোগ? আর এরই মধ্যে এবার বিএসএফ-এর ওপর নজরদারির 'দায়িত্ব' পেল ক্লাবগুলি।
গত বুধবার বুধবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে 'কর্মতীর্থ' নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। রাজ্যের সব জেলায় অনেক টাকা খরচ করে কর্মতীর্থ তৈরি করা হলেও তা অব্যবহৃত থেকে গিয়েছে। এই আবহে অব্যবহৃত কর্মতীর্তগুলির পরিচালনার দায়িত্ব বিভিন্ন ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় বৈঠকে। এদিকে বিএসএফ-এর 'বাড়বাড়ন্ত' ঠেকাতে স্থানীয় ক্লাবগুলিকে নজরদারি চালানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বহু বছর ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিএসএফ-কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এই আবহে সীমান্তবর্তী ক্লাবগুলিকে মমতার পরামর্শ, বিএসএফ-এর উপরে নজরদারি চালানো প্রয়োজন।
প্রশসনিক বৈঠকে মমতা অভিযোগ করেন, গ্রামে গ্রামে ঢুকে অত্যাচার চালাচ্ছে বিএসএফ। এই আবহে মমতার আশঙ্কা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামে ঢুকে বিএসএফ-এর 'তৎপরতা' বাড়তে পারে। এই আবহে মমতার নির্দেশ, বিএসএফ-এর টহলদারি সংক্রান্ত তথ্য যেন স্থানীয় থানার ওসি-র কাছে থাকে। মমতা জানান, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুলিশের দায়িত্ব, বিএসএফ-এর নয়। এই আবহে পুলিশ কর্তাদের পদক্ষেপ করতে বলেছেন মমতা। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেন মমতা। তবে ক্লাবগুলি কীভাবে এই 'নজরদারি' চালাবে? এই বিষয়ে এক মন্ত্রীর দাবি, সরকারি স্তরে আলোচনার মাধ্যমে এই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করা হবে।
এদিকে মমতার এই 'নির্দেশ' ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এই নিয়ে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'জাতীয় পতাকার সামনে বসে মুখ্যমন্ত্রী বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলছেন এবং স্থানীয়দের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছেন, তা সাংঘাতিক মনোভাবের প্রতিফলন।' যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, 'ক্লাবের অর্থ স্থানীয় সংগঠন। তারা সমাজেরই অংশ। বিএসএফ নিয়ে ভারতীয় হিসেবে আমরাও গর্বিত। তবে সাম্প্রতিককালে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তারই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে কোনও যুদ্ধ ঘোষণা তো আর হয়নি।'