গত মাসেই প্রথম দলে উদ্বাস্তু সেল গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সেলের আয়োজিত জনসভায় মঙ্গলবার বনগাঁয় মতুয়াদের কাছে টানতে বড়মা-র আবেগকে হাতিয়ার করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোঝানোর চেষ্টা করলেন, CAA হলে আদতে বিপদ উদ্বাস্তুদের।
এদিন প্রথম থেকেই NRC, NPR ও CAA-র কুফল বোঝাতে শুরু করেন মমতা। কী করে কেন্দ্র ষড়যন্ত্র করে মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে তা বোঝান তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। সেখানে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির বড় বউমা মমতাবালা ঠাকুর হেরেছেন তাঁরই দেওরের ছেলে শান্তনু ঠাকুরের কাছে। এর পর মোদী সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্তে উত্তর ২৪ পরগনার উদ্বাস্তু মহল্লায় ক্রমশ সমর্থন হারাচ্ছে তৃণমূল। CAA-র ফলে মতুয়াদের দীর্ঘদিনের নাগরিকত্বের দাবি পূরণ হতে চলেছে। ফলে মতুয়াদের গড়ে জনসমর্থন ধরে রাখা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে।
বিপদ আঁচ করে গত মাসেই দলে প্রথমবারের জন্য উদ্বাস্তু সেল তৈরি করেছিলেন মমতা। প্রাথমিক কর্মসূচি হিসাবে তাদের ৩টি সভা আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে মঙ্গলবার প্রথম সভা ছিল উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্তলাগোয়া শহর বনগাঁয়। এদিনই নদিয়ার রানাঘাটে আরেকটি সভা করার কথা তাঁর।
এদিন প্রথমে কিছুক্ষণ বড়মা-র সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে সময় ব্যায় করেন মমতা। চেষ্টা করেন মতুয়া আবেগকে তালুতে বন্দি করতে। এর পর সোজা চলে যান NRC, NPR প্রসঙ্গে। বলেন, ‘NPR হল NRC-র প্রথম ধাপ। আমার বুকের পাটা আছে, তাই এরাজ্যে NPR করতে দিইনি। এখানে সবাই নাগরিক। কাউকে আমি ঘরছাড়া হতে দেব না।‘ মোদীকে মমতার প্রশ্ন, ‘সবাই যদি নাগরিক না হয় তাহলে কাদের ভোটে জিতে এলেন আপনি?’
এদিনও মমতা দাবি করেন, যাদবপুরের সাংসদ থাকাকালীন উদ্বাস্তুদের জমির অধিকার পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। যদিও মমতার এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস ও বিজেপি। তাদের দাবি, জমি ও ভূমিরাজস্ব সম্পূর্ণরূপে রাজ্যের এক্তিয়ারের বিষয়। সাংসদ কী ভাবে কাউকে জমির মালিকানা পাইয়ে দিতে পারেন? যদিও এই নিয়ে আজও কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি তৃণমূলনেত্রী।
অসমের NRC-র কথা উল্লেখ করে এরাজ্যের হিন্দুদের সতর্ক করেন মমতা। বলেন, ‘অসমে NRC-তে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ গিয়েছে। তার মধ্যে ১২ লক্ষ লোকই হিন্দু। NRC-র আগে বলেছিল কোনও হিন্দুর নাম বাদ যাবে না।’