বন দফতরের প্রচেষ্টায় বাঘিনী জিনত ধরা পড়তেই বনকর্মী ও বনাধিকারিক-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অভিনন্দন, কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
রবিবারই ধরা পড়ে বাঘিনী জিনত। আর তার কিছু সময় পরই সন্ধে সাড়ে ছ'টা নাগাদ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন মমতা। সেই পোস্টে ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের এক ভিডিয়ো রয়েছে।
সেই ভিডিয়ো চালিয়ে দেখলে একেবারে শেষ মুহূর্তে অতি বড় সাহসীরও ভার্চুয়াল স্ক্রিনের এপাশ থেকে বুক ধুকপুক করে উঠবে! ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বাঘিনীকে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে বন্দি করার পর কাঁধে করে বয়ে আনলেন বনকর্মীরা।
তারপর অতি দ্রুততার সঙ্গে এবং নিপুণভাবে তাকে চালান করে দিলেন একটি শক্তপোক্ত ও আধুনিক খাঁচার মধ্যে। তারপর জরুরি কিছু কাজ সেরেই বন্ধ করে দিলেন খাঁচার মুখ। এদিকে, ওইটুকু সময়ের মধ্যেই জেগে উঠেছে জিনত! তাতেও এতটুকু ভীত না হয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করলেন বনকর্মীরা!
তাঁদের এই সাহসিকতা এবং দক্ষতা যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়েরও মন জয় করে নিয়েছে, সেটা তাঁর এদিনের 'এক্স' পোস্ট থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মমতা প্রথমেই লিখেছেন, 'বাঘিনী জিনতকে সফলভাবে উদ্ধার করতে পারার জন্য আমি পশ্চিমবঙ্গের বন বিভাগের আধিকারিকদের আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা না থাকলে কখনই এই 'অভিযান' সফল হতে পারত না। তিনি লিখেছেন, 'সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাঁদের সকলের মহামূল্যবান সহযোগিতা এবং সমবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই অসাধারণ কাজটি করার জন্য।'
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে এটাও উল্লেখ করতে ভোলেননি যে বন্যপ্রাণ রক্ষা করা কতটা জরুরি। তাঁর কথায়, 'বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ করতে সকলের দলগত প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠা যে কতখানি আন্তরিক, এই সফল উদ্ধার অভিযানই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।...'
'...আপনাদের সকলের মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই পথভ্রষ্ট একটি রাজকীয় প্রাণীকে শুধুমাত্র যে রক্ষা করাই সম্ভব হল, তাই নয়। একইসঙ্গে, আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করার গুরুত্বও পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হল। এমন একটি অসাধ্য সাধন করার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ!'
প্রসঙ্গত, এত দিনের লাগাতার চেষ্টার পর অবশেষে বাঘিনী জিনতকে অক্ষত ও সুস্থ অবস্থায় ধরতে পারায় এবং এই এত দিনের মধ্য়ে একজনও মানুষের হতাহতের ঘটনা না ঘটায়, পশুপ্রেমী ও পরিবেশকর্মীরাও বন বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।