তিন মাসের মধ্যেই ‘ফাঁসির অর্ডার’ আনতে বলেছিলেন। মাত্র ৬২ দিনেই জয়নগরের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় দোষীর ফাঁসির সাজা নিশ্চিত করতেই সেই পুলিশকে বাহবা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, ‘আমি পুলিশের কাছে এই তদন্তের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। যা অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দাখিল করা হয়, যা তাঁদের নিরলস পরিশ্রমের প্রমাণ। একইভাবে ২৩ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার জন্য আমি বিচারবিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’ তবে শুধু মমতা নন, পুলিশের প্রশংসা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দিয়েছেন বাহবা।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছিল
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের উপরে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছিল, সেই আবহেই জয়নগরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটেছিল। তার জেরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেই আবহেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে তিন মাসের মধ্যে দোষীর ফাঁসির সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
‘আমাদের সমাজে ধর্ষকদের কোনও স্থান নেই’, বললেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া সেই সময়সীমার আগেই জয়নগর মামলায় পুলিশ ফাঁসির ‘অর্ডার’ নিয়ে আসার পরে মমতা বলেন, ‘আমাদের সমাজে ধর্ষকদের কোনও স্থান নেই। আপনি যদি অন্য ব্যক্তির শরীর, মর্যাদা এবং তাঁর জীবনের মৌলিক অধিকারকে সম্মান করতে না পারেন, তবে একজন মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠা পেতে আপনি ব্যর্থ।’
আরও পড়ুন: ‘দু’মাস ধরে রাষ্ট্রপতির কাছে পড়ে আছে বিল, উচ্চবাচ্য নেই’, কেন্দ্রকে দুষলেন অভিষেক
তবে মুখ্যমন্ত্রী এটাও বলেছেন, 'সর্বোচ্চ ন্যায়বিচারও কখনও ভুক্তভোগীর পরিবারের অপূরণীয় যন্ত্রণা এবং ক্ষতির পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে না। তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই যে তাঁদের দুঃখের আমরা সকলেই ভাগীদার। আমিও তাঁদের কষ্টে, বেদনায় মর্মাহত। আমাদের হদয় তাঁদের জন্য সমব্যথী।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি এটি আগেও বলেছি এবং আমি আবারও বলব, প্রত্যেক ধর্ষক কঠোরতম শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য। সামাজিক জীব হিসেবে এই জঘন্য সামাজিক ব্যাধি দূর করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'
পুলিশের প্রশংসায় অভিষেকও
একই সুরে কথা বলেছেন অভিষেক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে দ্রুত ও কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বিশেষত রেকর্ড ২৫ দিনে চার্জশিট দাখিল করার জন্য পুলিশ সুপার পলাশ ঢালির নেতৃত্বাধীন সিটকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।'