বাংলায় খুব শীঘ্রই লাগু হবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা পশ্চিমবঙ্গে সফরে এসে বারবার এই দাবি করে গিয়েছেন। আর মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে সিএএ নিয়ে কিছু না বললেও এনআরসি নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, উত্তরবঙ্গবাসী তথা রাজ্যবাসীর কোনও ক্ষতি করতে পারবে না এনআরসি।
এদিন মমতা বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির যত উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। একটাও কলোনি নেই যা আইনত স্বীকৃতি পায়নি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে। পাট্টা পেতে হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু বিজেপি–র এনআরসি–র গাট্টা খেতে হবে না। আমরা সব উদ্বাস্তু কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছি।’
মমতার প্রশ্ন, ‘ওরা বলছে যে শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গে সিএএ লাগু হবে। কিন্তু এখন আবার বলছে এনআরসি হবে না, তবে এনপিআর হবে। আমার প্রশ্ন, এনপিআর এবং এনআরসি–র মধ্যে তফাৎ কী? এনআরসি–ও তো বাতিল করেনি ওরা।’ সাধারণ মানুষকে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো মনে করিয়ে দেন, ‘উত্তরবঙ্গের পাশেই অসম। ওখানে এ সব করে ১৯ লক্ষ মানুষকে বাদ দিয়েছে ওরা। হিন্দিভাষীও বাদ, গোর্খা ভাইবোনেরাও বাদ, আদিবাসীরাও বাদ। মনে রাখবেন, বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে কোনও অধর্ম কাজ হয় না।’
বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে ৩৫৬ ধারা লাগু করার দাবি জানিয়ে আসছেন। জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার পর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি আরও জোড়ালো করেছে বিজেপি। এ ব্যাপারে এদিনের সভায় মমতা বলেন, ‘ওরা ভাবছে বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আনবে। রাষ্ট্রপতি শাসন করবে? করে দেখ না। দারুণ হবে। আমার অনেক কাজ কমে যাব। আমি সারা জায়গায় মিটিং, মিছিল করে ঘুরে বেড়াব। তোমাদের ভোটটাকেও নিয়ে নেব।’
এদিন বিজেপি–র জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবির কটাক্ষ করেছেন মমতা। সম্প্রতি জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকেও। তার প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন মমতা বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সঙ্গীত পাল্টে দিতে চাইছে ওরা। একবার পাল্টে দিয়ে দেখো, তার পর কী করে উল্টোতে হয়, দেখিয়ে দেব। যদি এমন কিছু হয় তবে বাংলার মায়েরাই রাস্তায় বেরিয়ে কাসর, শঙ্খ হাতে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে।’