রাজ্য বাজেট পেশ হওয়ার পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের একবার বীরভূমের দেউচা পাঁচামি কয়লা প্রকল্পের সম্ভাব্য সুফলগুলি তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেউচা পাঁচামি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি হতে চলেছে। আগামী দিনে সারা রাজ্যের মানুষ তার সুফল পাবে। মমতার মতে, দেউচা পাঁচামির প্রকল্প রূপায়নের পর রাজ্যে আগামী ১০০ বছর কয়লার অভাব হবে না। ১০০ বছর রাজ্যবাসীকে বিদ্যুতের জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে না। গ্রাহকরা অত্যন্ত কম খরচে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন।
একইসঙ্গে মমতা জানান, দেউচা পাঁচামি প্রকল্পের জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ইতিমধ্যেই চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী দিনে এই প্রকল্প ঘিরে অনেক অনুসারী শিল্প তৈরি হবে। সেখানেও অসংখ্য ছেলেমেয়ে চাকরি পাবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে বিদ্যুতের বর্ধিত দাম নিয়ে ইদানীংকালে মাঝেমধ্যেই গ্রাহক অসন্তোষ দেখা যায়। এমনকী, তাতে রাজনীতির রংও লাগে। প্রতিবাদ, আন্দোলন, ঘেরাও - এসবই খুব একটা অপরিচিত ছবি নয়।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছে, বিদ্যুতের দাাম যেটা বাড়ছে, সেটা নাকি মূলত সিইএসসি এলাকাতেই বাড়ছে। মমতা বলেন, এই বিষয়টা নিয়ে তাঁর (সরকারের) কিছুই করার নেই। কারণ, সিইএসসি স্বশাসিত একটি বেসরকারি সংস্থা।
এবং এক্ষেত্রে ফের একবার পূর্বতন বাম জমানাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, সিইএসসি-র নিজস্ব কোনও একটি বোর্ড রয়েছে। সেই বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারেই বিদ্যুতের দাম পরিবর্তিত হয়।
একইসঙ্গে মমতা এও বার্তা দেন, দেউচা পাঁচামিতে পুরোদস্তুর কয়লা উত্তোলন শুরু হয়ে গেলে সিইএসসি এলাকাতেও বিদ্যুতের দাম সস্তা হতে পারে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে কেবলমাত্র কলকাতা ও হাওড়া শহর এলাকাতেই সিইএসসি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
রাজ্যের অন্যান্য অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারি সংস্থা। যদিও এই সংস্থার বিরুদ্ধেও আমজনতার অভিযোগ কম নয়। কিন্তু, বাজেট পেশের সময় রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর তথা বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
চন্দ্রিমা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রীর নেতৃত্বে চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) সারা রাজ্যে মোট ৭,৯৩,৮৮৫টি নতুন বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, দেউচা পাঁচার প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকায় জমিদাতাদের সঙ্গে সরকারের মধ্যস্থতা করানোর ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ দফতর যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, সেকথাও উল্লেখ করেছেন চন্দ্রিমা।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ দফতরের তৎপরতাতেই দেউচা পাঁচামিতে ৯০ শতাংশ জমিদাতার লিখিত অনুমতি সংগ্রহের কাজ সুসম্পন্ন হয়েছে।