একেবারে রাজনৈতিক সভা থেকে রাজনৈতিক বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে বার্তা গেল শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। আর অন্যদিকে কাঠগড়ায় তুললেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। মেদিনীপুরের সভা থেকে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিলেন তিনি। শুরুটাই করলেন অন্য আঙ্গিকে। তিনি বলেন, ‘করোনার জেরে অনেক বিধায়ককে আমরা হারিয়েছি। অন্য নানা কারণেও বিধায়ক হারিয়েছি।’ সুতরাং দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যাঁরা চলে গিয়েছেন বা যাবেন তাঁদের উদ্দেশ্যেই এই কথা বলেছেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
এরপরই তিনি মনে করিয়ে দেন আগামীকাল, মঙ্গলবার ভারত বন্ধ। তাই তিনি বলেন, ‘এই মেদিনীপুরের মাটিতেই আন্দোলন হয়েছে। আমরা অতীত ভুলি না। আজ মেদিনীপুরের সব বিধায়করা এসেছেন। গোটা ভারতের কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছি।’ তারপরেই নিজস্ব রণংদেহী মেজাজে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করলাম। কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছো। দাঙ্গা লাগাচ্ছ, মিথ্যে বলছো, দল ভাঙছো, জেনে রেখো তোমাদের উত্খাতের সময় এসেছে। আগে নিজেদের বাঁচাও।’
এদিন তিনি অভিযোগ করেন, নতুন আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র সবকিছু কেড়ে নিয়েছে। ব্লকে ব্লকে বিজেপি নতুন লোক নিয়োগ করেছে। কারা কী কাজ করছে তার ওপর নজরদারি করতে হবে। ৮ ডিসেম্বর থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল অবস্থান শুরু করছে। তিনিও সেই আন্দোলনে যোগ দেবেন। আগে আলুর দাম বৃদ্ধি হলে রাজ্য ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু এখন তা নেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যের নেই। তিনি বেগুন, পিঁয়াজ তুলে ধরে বলেন, দেশে আলু, পিঁয়াজ, মূলোর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দিল্লি সব খাবে, রাজ্য কিছু করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, কৃষকদের পাশে থাকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা নিয়ে দলের রাজ্যসভার সা্ংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন গিয়েছিলেন দিল্লির সিংঘু সীমানায়। আন্দোলনে সহমর্মিতা জানিয়ে ফোনে কৃষক পরমজিত সিংয়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকরাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোন বলে সম্বোধন করে পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।
সরকার ভাঙছে, ঘর ভাঙছে। বিজেপি তুমি তৃণমূল কংগ্রেসকে কিনতে পারবে না। মার খেতে খেতে এসেছি এই জায়গায়। তৃণমূলকে কিনতে পারবে না বিজেপি। তৃণমূল কংগ্রেস ঠুনকো নয়। বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে দেব না হুঙ্কার ছাড়লেন তৃণমূলনেত্রী। সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিডের টাকা দেয়নি। কোন মুখে হিসেব চাইছে কেন্দ্র? আমফানের টাকা দেয়নি। তুই টাকা দিয়েছিস যে হিসেব দেব।এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। গুজরাট বানাতে দেব না বাংলাকে। বিজেপি-র অনেক গুন্ডা আছে। অনেক টাকা আছে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের মতো কর্মী নেই। অনেক চোর চুরির টাকা সংরক্ষণের জন্য বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে।’ এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে যাঁরা দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছেন বা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁদেরকে চোর বললেন নেত্রী।