ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে প্রচারে গিয়ে জুতো ছিঁড়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ওই জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়েই জুতোয় সেফটিপিন লাগিয়ে নেন। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা তড়িঘড়ি নয়া জুতো নিয়ে আসার প্রস্তাব দিলেও তাতে সায় দেননি। বরং নিজেই জুতো ঠিক করে মহিলাদের সঙ্গে আদিবাসী নৃত্যে পা মেলান মমতা। প্রাথমিকভাবে অবশ্য নৃত্যে পা মেলাতে পারবেন না ভেবেছিলেন। যদিও শেষপর্যন্ত আদিবাসী মহিলাদের নিরাশ করেননি। ধামসাও বাজান মমতা। একেবারে চেনা ছন্দেই দেখা যায় তাঁকে। তারইমধ্যে মজা করে বলেন, 'জুতোর কোনও দোষ নেই। জুতোর যা আয়ু, তার থেকে বেশি হেঁটে ফেলেছে।’
ঠিক কী হয়েছিল?
শুক্রবার গোপীবল্লভপুরে জনসভা করেন মমতা। চেনা স্টাইলে ভাষণ দেন। নিজের সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন। বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ শানান বিজেপিকে। অভিযোগ করেন যে কাজ করবে তাঁর সরকার। ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিজ্ঞাপন দিয়ে বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলেও অভিযোগ করে মমতা।
সেভাবেই নরম-গরমে ভাষণ শেষ হওয়ার পরে এবারের প্রতিটি জনসভার ট্র্যাডিশন বজায় রেখে আদিবাসী নৃত্য পরিবেশনার জন্য মহিলাদের এবং গান গাওয়ার জন্য ইন্দ্রনীল সেনকে ডাকেন মমতা। তখনই তিনি জানান যে জুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এবার আমি ইন্দ্রনীলকে ডাকছি। আমার আদিবাসী ভাইবোনেরা ধামসা-মাদল বাজায়। তারাই অনেক কাজকর্ম করে। কিন্তু আজ আমি .... (পারব না, কারণ জুতো ছিঁড়ে গিয়েছে)।'
সেই কথা শুনে আদিবাসী মহিলারা এগিয়ে আসেন। তারইমধ্যে নিজের দলের কর্মী এবং সুরক্ষা দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন মমতা। মাইক্রোফোনে তাঁর গলা শোনা যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘ছিঁড়েই তো গিয়েছে। তো খালি পায়ে যাব। আর কী। নিয়ে আসতে হবে না। এখন কোথায় থেকে নিয়ে আসবে? ইন্দ্রনীল তুমি সেট করো। আমার জুতোটা ছিঁড়ে গিয়েছে। সেফটিপিন লাগাই।’
তারপর মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেই জুতো ঠিক করতে শুরু করে দেন। জুতো ঠিক করে নিয়ে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে নৃত্যে পা মেলান। তারইমধ্যে তিনি বলেন, 'হাঁটতে হাঁটতে (এরকম হয়েছে)। ওর দোষ কিছু নেই। মানে ওই জুতোর যা আয়ু, তার থেকে বেশি হেঁটে ফেলেছে।’