সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন জানাল ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন জানানো দার্জিলিঙের দুই গোর্খা গোষ্ঠী।
পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন চমক। সিএএ ও এনআরসি নিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (জিজেএম) ফেরার বিমল গুরুং গোষ্ঠী কোনও মন্তব্য না করলেও তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জিএনএলএফ) এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ রেভোলিউশনারি মার্কসিস্টস (সিপিআরএম)। গত লোকসভা নির্বাচনে এই দুই গোর্খা গোষ্ঠীই বিজেপিকে সমর্থন জানানোয় পাহাড়ে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা অর্জন করে দার্জিলিং কেন্দ্রে জয়ী হয় বিজেপি।
এই বিষয়ে সিপিআরএম-এর মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী জানিয়েছেন, ‘গোর্খাদের এক বড় অংশ সিএএ ও এনআরসি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন। সিএএ-তে আশির দশকে ভূটান থেকে বিতাড়িত গোর্খাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল।’ এই কারণে ওই আইনের সমর্থনে বিজেপির প্রচারে যোগ দেয়নি তাঁর দল, জানিয়েছেন গোবিন্দ ছেত্রী।
একই ভাবে জিএনএলএফ-এর তরফে মহেন্দ্র ছেত্রী বলেন, ‘সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর গোর্খাদের ক্ষতি করবে। দার্জিলিং পাহাড়কে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্গত করতে রাজি হলে আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সমর্থন জানাতে প্রস্তুত।’
আর এক গোর্খা সংগঠন জন আন্দোলন পার্টিও (জেএপি) সিএএ ও এনআরসি-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। দলের ব্যুরো সদস্য অমর লামা বলেন, ‘সিএএ-তে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তত্কালীন বার্মা থেকে বিতাড়িত গোর্খাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।’
অসমে এনআরসি তালিকায় প্রায় এক লাখ গোর্খা বাসিন্দার নাম বাদ পড়ার জেরে দার্জিলিং পাহাড়ে ২০১৯ সালে প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়।
গত কয়েক মাস যাবত্ সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে পাহাড়ে লাগাতার বিজেপি বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল ও তার জোটসঙ্গী জিজেএম-এর বিনয় তামাং গোষ্ঠী। প্রচারে বলা হচ্ছে, এনআরসি ও সিএএ চালু হলে স্থানীয় জনজাতিদের এক বড় অংশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবেন।
অন্য দিকে, তৃণমূল এই প্রচারের সাহায্যে পাহাড়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু সিং বিস্তা।
সম্প্রতি এক প্রেস বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ‘চা বাগান, সিঙ্কোনা প্ল্যান্টেশন ও বনাঞ্চলের অধিবাসীদের জমির স্বত্ত্ব দেওয়াই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য। স্বাধীনতা লাভের ৭২ বছর পরেও রাজ্য সরকার দার্জিলিং, তরাই ও ডুয়ার্সের মানুষকে জমির স্বত্ত্বাধিকার দেওয়া হয়নি। আমাদের পাহাড়িদের যাবতীয় কষ্টের মূল কারণ এটাই।’