প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন একই পাড়ার বাসিন্দা। প্রেমের সম্পর্ক গাঢ়ও হয়েছিল তাঁদের। গাছের আড়ালে দু’জনকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিল পাড়ার মাতব্বররা। অভিযোগ উঠেছে, সালিশি সভায় ডেকে এনে ঘনিষ্ঠ হওয়ার শাস্তি হিসেবে জোর করে ধরে বেঁধে ওই যুবক-যুবতীর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেই করুণ পরিণতি হল জুটির। ঘটনার জেরে আত্মঘাতী হলেন ওই যুবক। সোমবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মানিকচক গ্রামপঞ্চায়েতের মনকুট বাঁধ এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দা ২০ বছরের যুবক গ্রামের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তরুণীর সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। দু’জনের এই সম্পর্ক থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একে অপরের সঙ্গে মেলামেশা ঘুরতে যাওয়া চলতে থাকে। সেইমতো রবিবার বিকেলে দু’জনে বেরিয়েছিলেন। ঘুরতে ঘুরতে গ্রামেরই একটি বাগানে গিয়ে নির্জন জায়গায় বসে সময় কাটাচ্ছিলেন ওই জুটি। সেখানেই দু’জনকে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে দেখে ফেলেন গ্রামের এক বাসিন্দা। এরপরই গ্রামের মাতব্বররা মিলে সালিশি সভায় বসেন। সেখানেই এই যুগলকে বিয়ের নিদান দেওয়া হয়।
শুধু তাই নয়, দু’জনকে গ্রামের এক মন্দিরে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধরে বেঁধে বিয়েও দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তারপরই তরুণীকে যুবকদের বাড়িতে দিয়ে আসা হয়। কিন্তু যুবকের মা এইভাবে তাঁর ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। তিনি জানান, এই সম্পর্কে তাঁদের কোনও সায় নেই। তাছাড়া ওই যুবকের মা জানান, যেহেতু মানিকের বাবা ভিনরাজ্যে কর্মরত, সেই কারণে তিনি না আসা পর্যন্ত তাঁর পক্ষে কোনও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু গ্রামের মাতব্বররা জোর করে যুবকের মাকে তাদের নিদান মানতে বাধ্য করান বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই নিয়ে যুবকের সঙ্গে গ্রামের লোকজনের বচসাও হয়। কথা কাটাকাটি হয় মায়ের সঙ্গেও। এরপরই অভিমানে আত্মঘাতী হন মানিক। ঘটনা ঘিরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে মানিকচক থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আশিস মণ্ডলের নেতৃত্বে এই সালিশি সভা করা হয়। পুলিশ মৃত যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত জন্য মালদহ মেডিকেল এবং কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।