আবার ঘটনাস্থল মন্দারমণি। এবার এই সুন্দর সমুদ্রসৈকত জনপদে নিজের স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়, স্ত্রীকে খুন করার পর আত্মঘাতী হন স্বামী। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আর স্বামীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটা কোনও হোটেলে ঘটেনি। মন্দারমণিতে নিজেদের বাড়ি। আর সেখানেই এমন ঘটনা ঘটেছে। যা দেখে শিউরে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক অশান্তি ছিল। আর তার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বেশি রাতে দম্পতির বাড়ির একটি ঘর থেকেই স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর ওই ঘর থেকেই মেলে স্বামীর ঝুলন্ত দেহও। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। এই দম্পতির বাড়ি কোস্টাল থানার অন্তর্গত পিছাবনি এলাকার রামচন্দ্রনগর গ্রামে। এখানেই স্ত্রীকে কাতানের কোপ মেরে খুন করে স্বামী বলে অভিযোগ। তার পর আত্মঘাতী হন ওই ব্যক্তি। মৃতদের নাম ভাস্কর গিরি (৫২) এবং দূর্গারানি গিরি (৪২)। ভাস্করবাবু পানের ব্যবসা করতেন। মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: কলতানের কণ্ঠস্বর সংগ্রহ করতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য, ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপের জের
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই গ্রামের থেকে কিছু দূরে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। তাই সেখানেই পরিবারের বাকি লোকজন চলে গিয়েছিল। এই আবহে বাড়িতে তখন ছিলেন শুধুমাত্র ভাস্করবাবু এবং তাঁর স্ত্রী দুর্গারানি। এই ফাঁকা বাড়ি পেয়েই নিজের স্ত্রীকে খুন করেন স্বামী ভাস্কর। এই কাণ্ড ঘটিয়ে নিজেকেও শেষ করে দেন ভাস্করবাবু। এই পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল। কিন্তু তাঁদের মধ্যে নানা ইস্যুতে অশান্তি চলত। একে অন্যকে কটূ বাক্যও পর্যন্ত বলতেন। তবে হাতাহাতি কখনও হয়নি। তবে মদ খাওয়া নিয়ে রোজই দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। সেই অশান্তির জেরেই স্ত্রীকে খুন করেছেন ভাস্কর। তারপর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
গ্রামের যে অনুষ্ঠান ছিল সেখানে ভাস্কর গিরি এবং দূর্গারানি গিরির ছেলে গিয়েছিলেন। তাই বাড়ি ফাঁকাই ছিল। অনুষ্ঠান সেরে যখন ছেলে বাড়ি আসেন তখন তিনি ঢুকতে পারছিলেন না। কারণ দরজা বন্ধ ছিল। অত রাতে হাঁকডাক পাড়তেই পাড়া–পড়শিরা বেরিয়ে আসেন। তাঁরাও সেখানে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। অনেক হাঁকডাকের পর না খুললে বাড়ির চাল ভেঙে ঘরে ঢোকা হয়। আর তখন দেখেন বাবা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন। আর মা মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। দ্রুত তিনি মন্দারমণি কোস্টাল থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।