মাঝখানে রয়েছে খর্প নদী, যার এপারে ভারত এবং ওপারে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরেই বাংলাদেশে চরম নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে। দিকে দিকে আক্রান্ত হচ্ছে সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকরা। কার্যত লুটতরাজে পরিণত হয় বাংলাদেশ। যদিও গতকাল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। তারপরেই দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, তারপরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও হিংসা অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় প্রাণভয়ে ওপার বাংলা থেকে এই নদী পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছেন বহু বাংলাদেশি। এমনটাই ছবি দেখা গেল কোচবিহারের শীতলকুচিতে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ফেরত ট্রাকে করে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, হিলিতে হাতে নাতে ধরল BSF
কোচবিহারের শীতলকুচি ব্লকের গোলনাহাটি অঞ্চলের পাঠানটুলি গ্রামের কাশিয়ার এলাকার ওপারে রয়েছে বাংলাদেশের দই খাওয়া গ্রাম। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই নদীর ওপারে সীমান্তে কয়েকশো বাংলাদেশিকে ভিড় করে থাকতে দেখা যায়। তাদের অনেকেই নদী পার করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছেন বলে খবর। সেখানে বেলা বাড়তেই সীমান্তে বাংলাদেশিদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। নদীটি জিরো ল্যান্ডে অবস্থিত। তবে কাঁটাতারও রয়েছে।
সীমান্তে বাংলাদেশিদের ভিড় বাড়ার খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছে যান বিএসএফের আধিকারিকরা ৷ এর পাশাপাশি শিতলকুচি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয়। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সীমান্তে ভিড় করেছেন কয়েক হাজার বাংলাদেশি নাগরিক। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা যাতে কোনওভাবেই ভারতে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়াও নো-ম্যান্স ল্যান্ডেরও অনেকটা এলাকা পর্যন্ত বিএসএফ জওয়ানরা পৌঁছে যান। এরপরেই বিএসএফের তরফে ওই সীমান্তে টহলদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, সীমান্তে বাংলাদেশিদের ভিড় বাড়তে দেখে মাথাভাঙার মহকুমা শাসক নবনীত মিত্তাল বিশেষ নির্দেশে জারি করেছেন। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে কেউ জমায়েত করতে পারবে না। চার জনের বেশি একসঙ্গে যাতায়াত করতে পারবে না। রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কোনও পণ্য পরিবহণ করা যাবে না। এর পাশাপাশি সীমান্তে ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও গৃহপালিত পশু নিয়ে যাওয়া যাবে না। তাছাড়া, রাত ৮ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত ওই এলাকার মধ্যে কোনও দোকানপাট খোলা যাবে না।