প্রকৃতির তাণ্ডবে বিপর্যস্ত হওয়ার পর অবশেষে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দার্জিলিং। টানা ভারী বৃষ্টি ও ধসের পর সোমবার সকালেই মেঘ সরে দেখা মিলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার। পাহাড়ে নতুন করে বৃষ্টি হয়নি, ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের ও পর্যটকদের মনে। এক সপ্তাহের দুঃসহ সময় পার করে এদিন থেকেই পাহাড় থেকে পর্যটকদের নামানো শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সোমবার রাতে উত্তরবঙ্গের বন্যা নিয়ে পোস্ট! কার্নিভালে যাওয়া প্রসেনজিৎ হলেন ট্রোল
বর্ষণ ও ধসের জেরে গত কয়েকদিন ধরে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে সমতলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। বহু রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে বেশ কিছু রাস্তায় সংস্কারের কাজ শেষ করে চলাচল আংশিকভাবে শুরু হয়েছে। বর্তমানে দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি নামার প্রধান দু’টি রাস্তা হিল কার্ট রোড ও পাঙ্খাবাড়ি রোড খোলা রয়েছে। পর্যটকদের জন্য হিল কার্ট রোড দিয়ে তিনধারিয়া হয়ে সুকনার দিকে নামার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে পাহাড়ি এলাকায় পরিস্থিতি এখনই পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, শিলিগুড়ির সেবক থেকে সিকিমের রংপো পর্যন্ত ভারী পণ্যবাহী যান চলাচলে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত এবং পুনরায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি বুঝে যাত্রীবাহী বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হতে পারে, তবে আপাতত আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকতে পারে। দার্জিলিংয়ের বিজনবাড়ি, সুখিয়াপোখরি ও কার্শিয়াং অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও সেতুর মেরামতির কাজ জোরকদমে চলছে। বিজনবাড়ির যেসব পর্যটক কয়েকদিন ধরে আটকে ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশকেই প্রশাসনের সহায়তায় তিনধারিয়া ও পাঙ্খাবাড়ি হয়ে নিরাপদে সমতলে নামানো হয়েছে।
অন্যদিকে, মিরিকের দিকে যাওয়ার দুধিয়া সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় সেখানে যান চলাচল আপাতত বন্ধ। সেখানে একটি অস্থায়ী বেলি ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা চলছে বলে জানা গেছে। রোহিণী রোডও সোমবার সকাল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সিকিম থেকে কালিম্পং-লাভা-লোলেগাঁও হয়ে শিলিগুড়ি নামার বিকল্প রাস্তা খোলা রয়েছে।নাগোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর তরফে জানানো হয়েছে, মিরিক ব্লক ও বিজনবাড়ি ব্লকের একাধিক রাস্তায় সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। সুখিয়োপোখরিতে সোনাদা থেকে মুনদা যাওয়ার রাস্তা ও মিলিং রোডও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গরুবাথান, লাভা ও কালিম্পংয়ের ছোট রাস্তাগুলিতে কাজ এখনও চলছে।
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ সোমবার দুধিয়ার ভাঙা সেতু পরিদর্শনে গিয়ে জানান, দুধিয়া থেকে শিলিগুড়ির দিকে রাস্তায় কোনও সমস্যা নেই। তবে সেতু ভেঙে পড়ায় মিরিকের দিকের যাতায়াত আপাতত বন্ধ। কার্শিয়াং থেকে পাঙ্খাবাড়ি রোড ও হিল কার্ট রোড ব্যবহার করেই মানুষকে নামানো হচ্ছে।