রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে থমকে রয়েছে পানিহাটি পুরসভার একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার নাগরিকরা। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে পুরসভার এমন অবস্থার ফলে লোকসভা ভোটে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন শাসক দলের পুর প্রতিনিধিদের একাংশ। নাগরিকদের অভিযোগ, এই পুরসভায় বিদ্যুৎ, নিকাশি, জল থেকে শুরু করে কোনও পরিষেবায় ঠিকমতো মিলছে না। প্রায় ২ মাস ধরে উন্নয়নের কাজ থমকে রয়েছে এই পুরসভায়। এমন অবস্থায় পুরসভা কর্তৃপক্ষের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ নাগরিকরা।
আরও পড়ুনঃ তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পানিহাটি, বোমাবাজি এলাকায়, আহত ৪
রাজ্যের এ গ্রেড পুরসভা হিসেবে পরিচিত পানিহাটি। এদিকে, লোকসভা ভোট ঘোষণা হলে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য আর কোনও আর্থিক অনুমোদন দিতে পারবে না পুরসভা। কিন্তু, কেন পুরসভার এমন দশা? তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিকরা। জানা যাচ্ছে, গত জানুয়ারিতে পুরপ্রধান মলয় রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছে তৃণমূলেরই পুর প্রতিনিধিদের একাংশ। গত জানুয়ারিতে বোর্ড মিটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সেই মিটিংয়ে তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেননি। আর তারপরে বোর্ড মিটিংও হয়নি। এরফলে নাগরিক পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে। আরও জানা যাচ্ছে, মলয়কে সরিয়ে নিজের এক ঘনিষ্ঠকে পুরপ্রধানের চেয়ারে বসাতে চাইছেন তৃণমূলের স্থানীয় এক শীর্ষ নেতা। অন্যদিকে, পদ ছাড়তে চাইছেন না মলয়। এই নিয়ে কার্যত পুরসভার পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হয়ে উঠেছে। বোর্ড মিটিংয়ে উন্নয়ন সংক্রান্ত সব ধরনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে থাকে। কিন্তু বোর্ড মিটিং না হওয়ার ফলে তা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গিয়েছে, ভোটের আগে ৩৫ টি ওয়ার্ডে দুটি করে রাস্তার সংস্কার করার কথা ছিল। তাছাড়া রামচন্দ্রপুরের ভাগাড়ের সমস্যা সমাধান কথা ছিল। কিন্তু সেই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অন্যদিকে, একাধিক কর্মীও বেতন পাচ্ছেন না দীর্ঘদিন ধরেই। তাছাড়া বিদ্যুৎ দফতরের বেহাল অবস্থা। অধিকাংশ ওয়ার্ডে টাকার অভাবে রাস্তার আলো সারানো যাচ্ছে না। তবে দু একজন পুর প্রতিনিধি নিজেদের টাকায় আলো কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিও কার্যত বন্ধ। এমন অবস্থায় চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা আগামী মাস থেকে বেতন পাবেন কিনা তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন। শুধু তাই নয় পেনশন তহবিলও কার্যত শূন্য।
এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল নেতা নিজের স্বার্থে পুর প্রতিনিধিদের একাংশকে দিয়ে অচলাবস্থা তৈরি করছেন। সেখানকার বিধায়ক নির্মল ঘোষের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নির্মল ঘোষ। তিনি জানান, তিনি পুরসভার বিষয়ে থাকেন না। উপ-পুর প্রধান সুভাষ চক্রবর্তী দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।