পর পর ছ’জন আদিবাসী যুবতীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় আলাদা আলাদা রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, ওই যুবতীদেরই টাকাপয়সায় দিব্যি ঘুরেফিরে থাকছিলেন বিহারের বৈশালী জেলা থেকে আসা এক ব্যক্তি। এমনই অভিযোগ তুলেছেন জলপাইগুড়ির মাল ব্লকের একাধিক আদিবাসী মহিলারা। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে ওই আদিবাসী মহিলারা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি এক প্রতারক এবং তাঁদের ঠকিয়ে দিব্যি ঘুরেফিরে আছে। এই কথা জানতে পেরে রবিবার রাতে ওই ব্যক্তিকে মাল ব্লকের নেওরানদী চা বাগান থেকে ধরে গণধোলাই দেন তাঁরা। তারপর মাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
পুলিশ ওই ব্যক্তিকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম রাহুলকুমার সিং। বাড়ি বিহারের বৈশালী জেলায়। ঘটনার রাতে নেওরানদী চাবাগানের মহিলা প্রেমা সিং মাল থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান যে, তাঁর সঙ্গে রাহুলকুমার সিংয়ের দু’বছর আগে বিয়ে হয়। তিনি আরও জানান, এদিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ আলিপুরদুয়ার জেলার পাটকাপাড়া ও ধওলাঝোড়া চাবাগানের বাসিন্দা রজন্তি মিঞ্জ ও লক্ষ্মী মাহালী নামের দুই মহিলা আমার বাড়িতে এসে জানান, আমার স্বামী রাহুলকুমার সিং তাঁদেরও বিয়ে করেছে। এমনকী, তার আরও একটি স্ত্রী আছে।
শুধু তাই নয়, রাহুল বহু আদিবাসী মহিলাকে চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকা নিয়েছে। অবিলম্বে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আবেদন জানান তাঁরা। এখানেই শেষ নয়, ওই রাতেই মাল থানার সামনে দাঁড়িয়ে দুই মহিলা জানান, অভিযুক্ত রাহুলকুমার সিং তাঁদের বিয়ে করে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক ভাবে প্রতারণা করেছে। তাঁরা আরও জানান যে, ওই অভিযুক্ত ৬ জন আদিবাসী মহিলাকে বিয়ে করে আর্থিক ভাবে প্রতারিত করেছে।
এপ্রসঙ্গে আদিবাসী মহিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কার্যকরী সভাপতি বিনয় মুর্মু বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন সময় নানান ব্যক্তি বিভিন্ন টোপে আদিবাসী মহিলাদের প্রতারিত করছে। বিয়ের নাম করে সহবাস করছে। এই ব্যক্তি একাধিক আদিবাসী মহিলাকে বিয়ে করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা এই ব্যক্তির কঠোর শাস্তি চাইছি।’ এই ঘটনা প্রসঙ্গে মাল থানার আইসি সুজিত লামা জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।