সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে সিকিমের বিভিন্ন মেডিক্যাল বর্জ্য সহ বিভিন্ন রকমের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকা এবং ডাম্পিং গ্রাউন্ড এলাকায়। গত মাসে সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পরিবেশ কর্মীরাও এর প্রতিবাদ জানান। তারপরেও সেখানে সিকিমের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আজ মঙ্গলবার সিকিমের বর্জ্য শিলিগুড়িতে ফেলতে আসার সময় ৩টি ট্রাককে আটক করল পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরেই বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। সিকিম সরকারের তীব্র সমালোচনা করে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান মেয়র।
আরও পড়ুন: সিকিমের আবর্জনা ফেলে যাওয়া হচ্ছে শিলিগুড়ি লাগোয়া ফাঁকা জমিতে? চাঞ্চল্যকর দাবি রিপোর্টে
জানা গিয়েছে, আজ ভোরের দিকে তিনটি ট্রাকে করে গ্যাংটক থেকে বর্জ্য নিয়ে এসে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় ফেলা হচ্ছিল। সেবিষয়টি নজরে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।পরিবেশপ্রেমীরাও সেখানে যান। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুরনিগম এবং পুলিশ প্রশাসন। গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়ার পর বেজায় চটেছেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।
এরপরই আজ শিলিগুড়ি পুরনিগমে সাংবাদিক বৈঠক করে গৌতম দেব জানান, গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সরকার সিকিম সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবে। পুলিশ প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না বলেই জানান গৌতম দেব। গৌতম বাবু বলেন, ক্লিন সিকিম! আর জঞ্জালে ভরা বাংলা? এটা মেনে নেওয়া হবে না।
গৌতম দেব বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম তাদের বর্জ্য এবং মেডিক্যাল আবর্জনা এত দূরে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর নিজেরা বর্জ্য শূন্য রাজ্য হিসেবে নিজেদের দাবি করছে। এর আগে মেডিক্যাল ওয়েস্ট নিয়ে একটি গাড়ি ডাবগ্রাম ২ এলাকায় এসেছিল। সেটিকে আটক করা হয়েছিল সেটা নিয়ে একটি মামলা হয়েছে।’তিনি জানান, আজ মঙ্গলবারও একই ঘটনা ঘটে। তিনটি গাড়ি ১০ থেকে ১২ টন বর্জ্য নিয়ে গ্যাংটক থেকে এখানে এসেছিল। সেগুলি ফেলার সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের ধরে ফেলে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সিকিম সরকার যেটা করছে সেটা অনৈতিক, বেআইনি। রাজ্য সরকারকে বলব এ বিষয়ে সিকিমের সরকার অথবা সেক্রেটারিকে চিঠি দিতে।’ তিনি জানান, এই প্রবণতা আটকাতে এখানকার ডাম্পিং গ্রাউন্ড চারিদিকে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি আরও বেশি করে লাগানো হচ্ছে এবং পুলিশের সঙ্গে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। আরও বৈঠক হবে যাতে নজরদারি বাড়ানো যায়। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হয়েছে বলে তিনি জানান।