গ্রামে বাস করতে গেলে চলতে হবে গ্রাম কমিটির কথা মতো। কোনও অভিযোগ থাকলে যাওয়া যাবে না থানায়। এমনকী বাড়িতে মঙ্গলানুষ্ঠান করতে গেলেও জানাতে হবে গ্রাম কমিটিকে। নইলে দিতে হবে জরিমানা। এমনই মধ্যযুগীয় একগুচ্ছ ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের গ্রাম কমিটির বিরুদ্ধে। ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
দিন তিনেক আগে চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে খামে করে নোটিশ বিলি করে গ্রাম কমিটির সদস্যরা। যে সব বাড়িতে কেউ ছিলেন না সেখানে বাড়ির দেওয়ালে সাঁটিয়ে দেওয়া হয় নোটিশ। তাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, কোনও সমস্যা হলে সরসারি প্রশাসনে যাওয়া চলবে না, গ্রামকে জানাতে হবে। বাড়িতে কোনও মাঙ্গলিক বা অশৌচ কর্ম করার আগে গ্রাম কমিটির সঙ্গে বসে আলোচনা করতে হবে। গ্রামের কোনও ছেলে বা মেয়ে বাড়ির অমতে বিয়ে করলে তা গ্রাম কমিটিকে জানাতে হবে। সেক্ষেত্রে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া গ্রামের জমি কোনও মুসলিমকে বিক্রি করা যাবে না বলেও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে।
গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, এই নির্দেশিকা তাদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। এতদিন গ্রাম কমিটি চলেছে কখনো এরকম নির্দেশিকা জারি হয়নি। গণতান্ত্রিক দেশে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছে গ্রাম কমিটি।
ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। স্থানীয় বিজেপি নেতার দাবি, আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে গ্রামবাসীদের নিজেদের কাছাকাছি রাখতে এই নির্দেশ জারি করেছে তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরণের ফতোয়া আধুনিক যুগে চলে না। যারা এই কাজ করেছে তাদের খুঁজে বার করে পদক্ষেপ করুক পুলিশ।