শিবরাত্রির মধ্যেই পর পর ২ দিন মন্দিরের সামনে মাংস মেলাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর দিনাজপুরের বিহার সীমান্ত লাগোয়া পাঞ্জিপাড়া। শুক্রবার সকালে স্থানীয় দুর্গামণ্ডপে প্রাণীর দেহাংশ পড়ে থাকতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। এর পরই মন্দিরের সামনে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ ও RAF এসে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে অবরোধ তোলে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।
উত্তর দিনাজপুরের বিহার সীমানা লাগোয়া এলাকায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু। মাস কয়েক আগেই সীমানার ওপারে বিহারের কিশানগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে জয় পেয়ে চমকে দিয়েছে আসাদউদ্দিন ওবেইসির দল AIMIM. তার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পাঞ্জিপাড়ায় একটি শিবমন্দিরের সামনে মাংস পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, সেটি গোমাংস। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ জানান মন্দিরের ভক্তরা।
শুক্রবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে স্থানীয় একটি দুর্গামণ্ডপে। শিবরাত্রির সকালে সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় প্রাণীর দেহাংশ। এর পরই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে শুরু হয় অবরোধ। পুলিশ এসে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করলে অবরোধ উঠবে না বলে জানান স্থানীয়রা। এর পরই লাঠি চালাতে শুরু করে পুলিশ ও RAF. উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিত্ লাহিড়ির দাবি, বৃহস্পতিবার প্রথমে একটি শিবমন্দিরে প্রাণীর পা ঝুলতে দেখা যায়। স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখালে বিজেপির মণ্ডল সভাপতিকে অনুরোধ করে সেখানে নিয়ে গিয়ে পথ অবরোধ তোলায় পুলিশ। এর পর বিজেপির ওই মণ্ডল সভাপতির ওপর হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। হামলা চলে পুলিশের ওপরেও।
পরের দিন ফের প্রাণীর পা মেলে স্থানীয় একটি দুর্গামণ্ডপে। পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, পুলিশ এসে বেপরোয়া লাঠি চালিয়ে অবরোধ তোলে। চলে গুলি। তাতে কয়েকজন বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এর পর বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি-সহ ১৫ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশ্বজিত্ বাবুর দাবি, ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পরিবর্তে বিক্ষোভকারীদের বাড়িতে গিয়ে অত্যাচার করছে পুলিশ। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার প্রতিবাদে উত্তর দিনাজপুর জেলায় বনধ ডাকার পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে তারা।
এই ঘটনায় পুলিশ ও তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।