স্কুল পড়ুয়াদের জন্য আবার বড় ভাবনা রাজ্য সরকারের। মিড–ডে মিলে এতদিন সপ্তাহে একদিন করে সেদ্ধ ডিম দেওয়া হতো। কিন্তু তাতে শিশু পড়ুয়াদের শরীরে অতিরিক্ত পুষ্টি পৌঁছত না। সামান্য পুষ্টি পেত তারা। এবার ওই শিশু পড়ুয়াদের কথা ভেবে আরও একদিন তাদের পাতে ডিম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যাতে অতিরিক্ত পুষ্টি পায়। স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, রাজ্যের ৮৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৮৩ জন পড়ুয়াকে সপ্তাহে দু’দিন অতিরিক্ত ডিম দেওয়া হবে। আগে সপ্তাহে একটি ডিম পড়ুয়াদের মিলত মিড–ডে মিলে। তার সঙ্গে এই অতিরিক্ত ডিম আরও একদিন দেওয়া হবে।
এদিকে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, প্রত্যেকটি ডিমের দাম সেক্ষেত্রে পড়বে ৮ টাকা। রাজ্যের ৮৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৮৩ জন পড়ুয়াকে দু’দিন ধরে ডিম দেওয়া হবে। তাই সপ্তাহে দু’দিন করে শিশু পড়ুয়াদের এই অতিরিক্ত সেদ্ধ ডিম খাওয়াতে খরচ পড়বে মোট ৭৫ কোটি ৬২ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা। আর এই সিদ্ধান্ত আগামী ৩১ মার্চ তারিখের মধ্যে সব স্কুলে কার্যকর করতে বলা হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতে শিশু ও তাদের অভিভাবকরাও অত্যন্ত খুশি। ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের পরেও তহবিল অবশিষ্ট ছিল। আর সেই তহবিল শিশু পড়ুয়াদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। বরাদ্দ করা ৭৫৬২.৫৩ লক্ষ টাকা থেকে যে অতিরিক্ত অর্থ বেঁচে গিয়েছে সেটা থেকেই শিশু পড়ুয়াদের পাতে অতিরিক্ত একদিন ডিম তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের তৈরি রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার, কত টাকা দিচ্ছে?
অন্যদিকে মিড–ডে মিল নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তারা রাজ্য সরকারকে যথাযথ অর্থ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকী এবার সামান্য পয়সা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে মিড–ডে মিলে। সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে, মিড–ডে মিলে বরাদ্দ অর্থের একটি অংশ খরচ হয়নি বলে রাজ্য সরকার বছর শেষে সাপ্লিমেন্টারি পুষ্টির নামে সপ্তাহের অতিরিক্ত দু’দিন করে গোটা ডিম সেদ্ধ রান্না করা খাবারের সঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নানা জেলার জেলাশাসকদের এবং মিড–ডে মিলের দায়িত্বে থাকা অফিসারদেরও এই নিয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অভিভাবকরা। ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীও অত্যন্ত সাধুবাদ জানিয়ে এই উদ্যোগ শিশু পড়ুয়াদের উপকারে আসবে বলেছেন। কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘আমরা চাই সারাবছর শিশু পড়ুয়ারা পুষ্টিকর খাবার পাক। রাজ্য সরকারের উদ্যোগের যাতে বাস্তবায়ন হয় সেটাই দরকার। সমস্ত স্কুলগুলিতে যাতে তা কার্যকর হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।’