রাজ্য়ের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলল ব্যাপটিস্ট চার্চ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, মেদিনীপুর শহরে তাদের মালিকানাধীন জমিতে হাত পড়েছে অসাধু প্রোমোটারদের। সেই জমি বেআইনিভাবে হাতবদল করে দেওয়া হয়েছে। আর সেই কাজে নাকি মদত দিচ্ছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর!
এই ঘটনা নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন চার্চের সম্পাদক পীযূষকান্তি ঘোষ, সভাপতি মনোজ্যোতি ভকত, কোষাধ্যক্ষ রঞ্জয় ডেভিড মণ্ডল, সদস্য তুহিনকুমার দে ও মনিরাজ সিং-সহ অন্যরা। তাঁরা এই অনিয়ম বন্ধ করতে অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহর ও সিপাই বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১১ একরের একটি বিরাট জমি রয়েছে। এই জমির মালিকানা রয়েছে ব্যাপটিস্ট চার্চের কাছে।
এই জমির মূল অংশে একটা ঘেরা জায়গায় রয়েছে চার্চ বা গির্জা। আর বাদবাকি অংশে রয়েছে একাধিক পুরোনো বাড়িঘর। সেগুলিও ঘেরা এলাকার মধ্যেই রয়েছে। মূলত এই ঘরবাড়িগুলি সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের বসত হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
এরই মধ্যে হঠাৎ দেখা যায়, মোট ১১ একর জায়গার মধ্যে প্রায় ৬ একর জমি হাতবদল হয়ে গিয়েছে। যা বেআইনি বলে দাবি করছে চার্চ কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, কার্যত রাতারাতি কিছু জমি মাফিয়া ও দুষ্কৃতী সেই জায়গা দখল করে প্রোমোটারদের বিক্রি করে দিয়েছে! সেই জমির রেকর্ড তৈরি করার পাশপাশি ডিড পর্যন্ত তৈরি করা হয়ে গিয়েছে!
চার্চ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এই কাজ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়াও কখনই সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষের আরও যুক্তি, এই পুরো ১১ একর জমি আদতে দেবত্ব সম্পত্তি এবং সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ। তার উপর এই জমি নিয়ে আগেই আদালত তার রায়ে জানিয়ে দিয়েছে, আইনত এই জমি কাউকে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
তাহলে প্রায় ৬ একর জমির মালিকানা রাতারাতি বদল হল কীভাবে? এই ঘটনার নেপথ্যে গভীর চক্রান্ত ও সঙ্গবদ্ধ অপরাধচক্র রয়েছে বলেই অভিযোগ করেছে চার্চ কর্তৃপক্ষ।
এখানেই শেষ নয়। সংবাদমাধ্যমকে চার্চের সম্পাদক পীযূষকান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা এই অন্য়ায়ের প্রতিবাদে সরব হওয়ায়, রাতের অন্ধকারে এসে তাঁদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। ফলে চার্চের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন এবং ওই এলাকার সংখ্যালঘু খ্রিস্টানরা আতঙ্কিত বোধ করছেন।
এই অবস্থায় পীযূকান্তিরাা স্থির করেছেন, সমস্যার সমাধান না হলে এবং লুট হওয়া জমি ফেরত না পেলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।