করোনাভাইরাসের জেরে লাগাতার চলেছে লকডাউন। তাতে কাজের বাজার খারাপ হয়েছে। তাই কাজ মিলছিল না। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী ও ১০ মাসের শিশুকন্যাকে নিয়ে কাজের সন্ধানে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর সেখানে যাওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই মৃত্যু হল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের পরিযায়ী শ্রমিক নুর ইসলামের (২২)। এই শোকস্তব্ধ পরিবারের পাশে গোটা গ্রাম কান্নায় ভেঙে পড়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, হায়দরাবাদে রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কাজ করতেন নুর। তা দিয়েই চলছিল সংসার। কিন্তু শনিবার জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। করোনা সন্দেহে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ইঞ্জেকশন দেওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই নুর মারা যান। ওই চিকিৎসকের নামে থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছে বলে খবর।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, নুরই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। তাঁর বাড়িতে বাবা, মা ও এক দাদা রয়েছেন। দাদা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ২০২০ সালের লকডাউনের আগে এখান থেকে ফিরে বিয়ে করেছিলেন নুর। তার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু সংসারে টান পড়ায় স্ত্রী, শিশুকন্যাকে নিয়ে হায়দরাবাদে যান। সেখানে বালাপুর থানার নিউ বাবানগরে থাকতেন।
নুরের মৃত্যুতে শোকে জ্ঞান হারিয়েছেন স্ত্রী মুক্তারী খাতুন। জ্ঞান ফিরলেই কেঁদে চলেছেন। এই বিষয়ে বাবা আব্দুল আলিম বলেন, ‘করোনায় ছেলেটাকে যেতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু বলেছিল, এখানে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। কিন্তু তরতাজা ছেলেটা এভাবে হারিয়ে যাবে ভাবিনি।’ এখন গোটা সংসারটা চলবে কি করে তা নিয়ে ভাবতে পারছেন না কেউ।