ভারত-পাক সংঘাতের সময় কাশ্মীরে গিয়ে নিখোঁজ মালদার শ্রমিক, উৎকণ্ঠায় পরিবার

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত চলার সময় কাশ্মীরে কাজে গিয়েছিল। তারপর থেকেই নিখোঁজ বাংলার এক নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক। গত ১২ দিন ধরে তার কোনও খোঁজখবর পাচ্ছে না পরিবার। ওই শ্রমিকের নাম আশফাক হক (১৭)। সে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাটিওন গ্রামের বাসিন্দা। এই অবস্থায় উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আশফাকের মা। ছেলে যাতে দ্রুত ঘরে ফিরে আসে, সে বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, এই ঘটনায় বাংলায় কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ দিন আগে রোজগারের আশায় কাশ্মীরে পাড়ি দিয়েছিল আশফাক। ঢালাই মিস্ত্রি হিসেবে সেখানে কাজে যোগ দিয়েছিল। তবে সে কাশ্মীরে যাওয়ার পরেই ভারত পাকিস্তানের মধ্যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর তারপরেই দু দেশের মধ্যে শুরু হয় সংঘাত। কয়েক দিন ধরে চলা সেই সংঘাতে পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তসহ ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে বারবার হামলা চালানোর চেষ্টা করে। যদিও তা ব্যর্থ করে দেয় ভারতীয় সেনা। সরকারের পক্ষ থেকে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়। ব্ল্যাক-আউট করা হয় সীমান্তবর্তী এলাকা। এই পরিস্থিতির মধ্যে সেখানেই ছিল আশফাক। সেই সময় বাড়িতে ফোন করে আশফাক জানিয়েছিল, সব সময় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। খাবার নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সে দ্রুতই বাড়ি ফেরার কথা জানিয়েছিল তার মাকে।

কিন্তু, তারপর থেকেই আশফাকের মোবাইল সুইচ অফ হয়ে রয়েছে। ফলে তার সঙ্গে কোনওভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেও তার কোনও খোঁজ পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় আশফাক কী পরিস্থিতিতে রয়েছে? তার সঙ্গে কোনও দুর্ঘটনা ঘটল কি না তানিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

বিষয়টি জানাজানি হতেই পরিযায়ী শ্রমিকের সন্ধানের জন্য পরিবারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। তিনি আশফাকের বিষয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানান। অন্যদিকে, উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকারকে দায়ী করে পরিযায়ী শ্রমিকের সন্ধানের চেষ্টা চালাবেন বলে জানিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, বাড়ির বড় ছেলে আশফাক। তার আরও দুই ছোট ভাই বোন রয়েছে। এই অবস্থায় কবে আশফাকের খোঁজ মিলবে তাই নিয়ে চিন্তায় গোটা পরিবার।