রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবাদে উত্তরবঙ্গের চা বাগানে কর্মী সংকটের সুরাহা হতে চলেছে। পাশাপাশি, কাজ হারানো শ্রমিকদেরও রোজগারের বিকল্প রাস্তা তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিতে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গে ফেরত আসা দেশের নানান প্রান্তে কর্মহীন শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে। বিশেষ করে দার্জিলিং জেলার ২৮৩টি চা বাগানে যে তীব্র কর্মী সংকট গত কয়েক বছরে দেখা দিয়েছে, তার অনেকটাই সমাধান করতে পারবেন তাঁরা, মনে করছে বাগান কর্তৃপক্ষ।
অন্য দিকে, করোনা লকডাউনের জেরে ভিনরাজ্যে কাজ হারিয়ে ঘরে ফেরা শ্রমিকরাও চা বাগানে কাজ পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধেছেন। বাগানে কাজের জন্য প্রতিদিন সাধারণত ১৭৬ টাকা রোজগার করেন প্রতিটি শ্রমিক।
পূর্ণ শক্তিতে কাজ চালাতে গেলে দার্জিলিং পাহাড়ের চা বাগানগুলির মোট ৩,০০,০০০ কর্মীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে উন্নত রোজগারের আশায় চা বাগান ছেড়ে অন্যান্য রাজ্যে ভিন্ন পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন চা শ্রমিকরা। লকডাউনের কারণে দেশজুড়ে নানান শিল্প বন্ধ হওয়ায় তাঁরা বেরোজগেরে হয়ে পড়ে বাধ্য হয়ে ঘরে ফিরেছেন। পেটের টানেই এবার তাঁরা পুরনো পেশায় ফিরবেন বলে মনে করছেন চা বাগানের পরিচালকরা। আবার শ্রমিকদেরও আশা, ঘরে ফিরে বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা হবে ছেড়ে যাওা চা বাগানে।
টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান আর পি থাপলিয়াতের হিসেবে, গত কয়েক বছরে চা বাগানে প্রতিদিন প্রায় ৩০% শ্রমিক কম পড়ছে। এর জন্য বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদ্য শেষ হওয়া ফার্স্ট ফ্লাশ মরশুম, যে সময়ে চা শিল্পে বছরের সর্বোচ্চ আয় হয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে ফেরা শ্রমিকরা এর মধ্যেই চা বাগানে কাজের জন্য আবেদন শুরু করেছেন, জানিয়েছেন গোর্খা ন্যাশনাল ফ্রন্ট প্রভাবিত হিমালয়ান প্ল্যানটেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এস কে লামা। তাঁর মতে, একদা যে সমস্ত চা বাগানে তাঁরা কাজ করতেন, ঘরে ফেরার পরে সেখানেই আয়ের আশায় কাজে যোগ দিতে চাইছেন শ্রমিকরা।
দার্জিলিং পাহাড়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চা বাগান মালিক জানিয়েছেন, সরকার পূর্ণ শক্তিতে কাজ শুরু করার অনুমতি দিলেই চা বাগানে বিপুল হারে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে।