নিউ টাউন এনকাউন্টারকাণ্ডে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। নিউ টাউনে শাপুরজি সুখবৃষ্টি আবাসনে এসটিএফের এনকাউন্টারে পঞ্জাবে দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের মৃত্যু নিয়ে মুখ খোলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বসিরহাটের দলের সাংগঠনিক বৈঠকে উপস্থিত হন তিনি। পরে দিলীপ বলেন, ‘এ রাজ্যে জঙ্গি ধরা পড়ার ঘটনা নতুন কোনও বিষয় নয়। এ রাজ্য যেভাবেই আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, তাতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীরা এ রাজ্যকে লুকোনোর সুরক্ষিত জায়গা হিসেবে বেছে নিচ্ছে।’
দিলীপ আরও বলেন, ‘ওটা এশিয়ার সবচেয়ে বড় আবাসন। কার বাড়িতে কে থাকে, তা কিছুই জানা যাচ্ছে না। ওর মধ্যে কয়েক হাজার ফ্ল্যাট আছে। সেখানে যাঁরা ফ্ল্যাটের আসল মালিক, তাঁরা থাকেন না। তাঁদের ফ্ল্যাট অন্য কাউকে ভাড়া দিয়ে দেন। কোনও না কোনও দালাল এই ভাড়া ঠিক করে দেয়। এই ধরনের অবাঞ্ছিত লোকেরা ওখানে দিনের পর দিন থাকছে। ওখানকার বাসিন্দাদের কোনও সুরক্ষা নেই। রাজ্য সরকারকে প্রতিটি ফ্ল্যাট সুরক্ষিত করে তার তথ্য রাখা উচিত। যে পদ্ধতিতে রয়েছে, কাউকে ভাড়া দিতে গেলে ভাড়াটিয়ার সমস্ত পরিচয় নিয়ে থানায় জমা দিতে হয়। এই ব্যাপারে আরও কড়াকড়ি না হলে, এরকম ঘটনা আরও দেখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ রাজ্যে সিপিএমের আমল থেকেই একাধিকবার শিখ উগ্রপন্থীদের আমরা এখানে আশ্রয় নিতে দেখেছি। তাদের সঙ্গে গুলি গোলাও চলেছে। পুরুলিয়া, হাওড়াতে এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের সংঘর্ষও হয়েছে। এখানেও একই জিনিস ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনা রুখতে গোয়েন্দারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’
রাজ্যকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, ‘এখানকার রাজ্য সরকার জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়। এর আগে মিজোরামের জঙ্গিরা ধরা পড়েছে। এখানে বাংলাদেশের জঙ্গিদের পাওয়া যায়। কোনও স্ক্রুটিনি হয় না। সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই। এ রাজ্যকে বিদেশী অপরাধীরা আশ্রয়স্থল বানিয়ে নিয়েছে। তার পর এখান থেকে বসে গোটা দেশে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এখানকার সরকার এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে চায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ খাগড়াগড় কাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বাংলাদেশের জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল। এখানে এরকম বহু ঘটনা ঘটেছে।’
বুধবার দুপুরে নিউ টাউন শাপুরজি আবাসনে এসটিএফের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় দুই কুখ্যাত পঞ্জাবি গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার ও যশপ্রীত জাস্সির। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি অত্যাধুনিক রিভলবার, ৮৯ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও নগদ ৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। নিহত দুই গ্যাংস্টার গত ১৫ মে পঞ্জাবের লুধিয়ানার দুই পুলিশ কর্মীকে খুন করে পালায়। মৃতদের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ১০ ও ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল পঞ্জাব সরকার। গত কয়েকদিন ধরেই তাদের উপর নজর চালাচ্ছিল গোয়েন্দারা। দুপুরে তাদের নির্দিষ্ট অবস্থান জানতে পারে এসটিএফ। এরপর তাদের গ্রেফতার করতে শাপুরজি আবাসনে পৌঁছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।