বেআইনিভাবে রাজ্যের বাইরে আলু পাচারের অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ীদের একাংশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। তিনি জানিয়েছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাজ্যের বাইরে আলু পাচার করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে চাইছেন। আর সেই সুযোগে আলুর দাম বাড়াতে চাইছেন। এই অবস্থায় আলু পাচার রুখতে এবার সারপ্রাইজ ভিজিটের পাশাপাশি প্রয়োজনে রাত পাহারা দেওয়ার কথা জানালেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। ইতিমধ্যেই মন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে সারপ্রাইজ ভিজিট করেছেন। বাংলার সীমান্তগুলিতেও তিনি সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হিলি সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা শেষ আলুর গাড়িটিও রওনা দিল বাংলাদেশে! এরপর কী হবে?
একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী দাবি করেন, যে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৯৪ মেট্রিক টন আলু বাইরে পাচার করা হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাজ্যকে না জানিয়েই সেই আলু বাইরে পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। তিনি দাবি করেছেন, আলুর দাম বাড়িয়ে এই ব্যবসায়ীরা রাজ্যকে বিপাকে ফেলতে চাইছেন। একই সঙ্গে মন্ত্রী জানান, অনেক আলু ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা বেআইনিভাবে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার বস্তা আলু মজুত রেখেছেন। তাদের তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের তালিকা সংগ্রহ হয়েছে বলে জানান মান্না। এই সমস্ত আলু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মন্ত্রী।
তিনি অভিযোগ করেছেন, অনেক আলু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সহযোগিতায় রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যদি আলু বেড়ে যায় তবেই বাইরে পাঠানো হবে অথবা মিড ডে মিলের জন্য কেনা হবে। বেচারামের কথায়, এবার বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে আলু চাষে দেরি হয়েছে। ফলে বাজারে নতুন আলু আসতে আরও ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় লেগে যাবে। বর্তমানে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে যে আলু মজুত রয়েছে সেগুলি দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে ৬ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি আলু মজুত রয়েছে। আর বাংলায় প্রতিদিন ১৮ হাজার মেট্রিক টন আলু লাগে। শুধুমাত্র কলকাতায় দৈনিক আলুর চাহিদা হল ৫০০০ টন। তবে শীতকালে বাজারে নতুন সবজি আসায় আলুর চাহিদা কিছুটা কমেছে। ফলে এই মজুত থাকা আলু আগামী ৪০ থেকে ৪৫ দিনের জন্য যথেষ্ট। আলুর দাম কমার বিষয়ে মন্ত্রী জানান, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে রাজ্যে। পাশাপাশি আলু ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি নিয়ে বিজেপি ও সিপিএমকে দায়ী করেছেন তিনি।